আ.লীগের সুবিধাভোগীরা এসে কেঁদে দিয়ে বলে তারাও বঞ্চিত: আইন উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরাও এসে কেঁদে দিয়ে বলে তারাও বঞ্চিত। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘ঐক্য

কোন পথে’শীর্ষক জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের মূল দায়িত্ব হচ্ছে তিনটি। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। তার মধ্যে আমার কাছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল

ইসলামে কাছে ও অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের কাছে মূল দায়িত্ব হচ্ছে বিচার। আমরা বিচার করতে বদ্ধপরিকর এবং আমরা কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিচারকার্য করার চেষ্টা করছি এটা আপনারা দেখবেন। কত দ্রুত সময়ে আমরা এই ট্রাইবুনাল

পুনর্গঠন করেছি; সবকিছু- বিচারক, প্রসিকিউশন ও ইনভেস্টিগেশন সবকিছু। এমনকি ভবন ছিল না এই ভবনের নির্মাণ কাজ দ্রুত করার জন্য আমি এবং পূর্ত উপদেষ্টা চারবার সশরীরে গিয়েছি ওখানে আর ভাই কিছু করার নাই যা করা সবই করছি।

তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় হলো- আমি মনে করি এই সরকারের (আওয়ামী লীগ সরকার) আমলে শুধু একটা গণহত্যা বা একটা মানবতাবিরোধী অপরাধ হয় নাই। এ সরকারের আমলে কমপক্ষে চারটা বড় ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনা ঘটেছে।

একটা হচ্ছে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড ও আরেকটা হচ্ছে ধারাবাহিক গুম এবং বিচার বহির্ভূত হত্যা- বিচ্ছিন্নভাবে হলেও ওইটার মধ্যে একটা মানে কনসার্টেড এফোর্ট এবং সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল।

‘আমি আপনাদের বলতে চাই আমাদের সরকার যতদিনই আছে এই চারটি বড় ধরনের গণহত্যার বিচারের জন্য যত রকম প্রচেষ্টা দরকার আমরা অবশ্যই গ্রহণ করব’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে জুলাই গণহত্যার যে বিচারটা- যেটা আমরা শুরু করেছি তাজুল কারেক্টলি বলেছে- এটা আমরা বদ্ধপরিকর।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা আশা করছি এই বিচার- এখানে দেখলাম প্রস্তাবনায় বলা হচ্ছে সামনের বছর বিজয় দিবসের আগেই এই বিচার অন্তত বিচারিক আদালতে সম্পন্ন হবে। আমরা আগামী বিজয় দিবস গণহত্যাকারীদের শাস্তির রায় সেলিব্রেশনও করব। অন্যান্য সাকসেস উদযাপন করে করতে পারব- আশা করছি।

তিনি বলেন, এখন আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জের কথা বলি। বিচারের পাশাপাশি না আমরা অনেক কাজ করি যেহেতু অনেক সমালোচনাও শুনি। কাজেই পর্দার আড়ালে যে কাজগুলো করি সেগুলো একটু আপনাদের জানা প্রয়োজন।

যেমন- আপনারা দেখলেন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটা এক্সট্রা এডিশন তাকে প্রত্যর্পণের চিঠি- তাকে যেন প্রত্যর্পণ করা হোক। এ চিঠিটা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিন্তু চিঠিটা আমরা তৈরি করে দিয়েছি; আইন মন্ত্রণালয় প্রিপেয়ার করে দিয়েছে।

আপনারা দেখছেন যে ইন্টারপোলে নোটিশ জারি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে ধরার জন্য- এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জারি করেছে। এটা আমরা প্রিপেয়ার করে দিয়েছি। এরকম এই অনেক কিছু।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা আসলে এই সরকারে যে আসলাম বা আমরা যে ফ্যাসিস্ট শাসন আমলকে বিতারিত করলাম- আমরা কিসের জন্য করেছি; এটা নতুন রাষ্ট্র গঠনের জন্য। কিন্তু আমরা যত মানুষকে দেখি সব হচ্ছে দাবি

দেওয়া ভিত্তিক- যে আমি পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছিলাম, বেতন বঞ্চিত হয়েছিল, আমার খারাপ জায়গায় বদলি করেছে, আমাকে এটা দেয় নাই, আমার বেতন বাড়াইতে হবে ও আমাকে রাজস্ব খাতে নিতে হবে। সব কিছু হচ্ছে ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর দাবি-দেওয়া

কেন্দ্রিক। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে আমাদের কাছে কেউ আসে না। আমাদের কাছে কেউ এসে বলে নাই পাবলিক প্রসিকিউশন সার্ভিস কে এরকম করেন, বিচার বিভাগের ইন্ডিপেন্ডেন্সের জন্য এরকম করেন। আমাদের কাছে তথ্য আপা থেকে

শুরু করে সমস্ত আপা-ভাইরা যারা আছেন সবাই হচ্ছে নিজেদের দাবি ব্যক্তিগত দাবি। মন্ত্রণালয় ৩০% সময় যায় ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে। এসেই সবিস্তারে বলা শুরু করে আমি এই আমলে বঞ্চিত হয়েছি এবং কত রকম যে বঞ্চিত। আমি যাকে সারা জীবন জানতাম আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী সেও এসে কেঁদে দেয়। আমিও বঞ্চিত। এখন আমি আমি কাজ কী করব বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *