সীমান্ত সম্পূর্ণভাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্ত ও দেশবাসীকে জানাতে চাই- আপনাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্তের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সীমান্তবাসীর আতঙ্কিত

হওয়ার কারণ নেই। সীমান্ত সম্পূর্ণভাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সোমবার দুপুরে সীমান্ত ঘুরে টেকনাফ দমদমিয়ার নাফ নদে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে নৌপরিবহন জেটি ঘাটে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে সব পরিস্থিতি সমাধান হয়ে গেলে নাফ নদে মাছ শিকারসহ শাহপরীর দ্বীপে করিডোর খুলে দেওয়া হবে। সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। তবে সীমান্তবাসীর নিরাপত্তায় বিজিবি ও কোস্ট গার্ড পেশাদারিত্বের সঙ্গে

দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এতে সীমান্তবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। সীমান্ত সম্পূর্ণভাবে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছি আমরা। এখানে সব বাহিনীর জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, নতুন করে যারা অনুপ্রবেশ করেছে তাদের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়টি নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশ সীমান্ত পুরোপুরি বিজিবির নিয়ন্ত্রণে।

সীমান্তে স্থানীয়দের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে কিছু দালাল রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে সহযোগিতা করছে। আমাদের স্বার্থ রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে প্রথম থেকে মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সীমানাঘেঁষা মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় দেশটির বিপ্লবী গোষ্ঠীর পাশাপাশি সরকার যেহেতু এখনো জান্তা, তাই দুই পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, সীমান্ত

বাহিনীর অগোচরে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করেছে। কিছু বাংলাদেশী দালাল চক্র মরিয়া হয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করাচ্ছে। এ চক্রকে প্রতিহত করতে সবার সহযোগিতা দরকার। না হলে এরা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।

অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জাতিসংঘের প্রধান সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য বিশ্বের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পরিস্থিতি যাই হোক অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তিনি বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে টেকনাফ পৌঁছান। পরে ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর টেকনাফের কয়েকটি

সীমান্ত পয়েন্ট পরিদর্শন করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। পরে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিফ্রিং করেন তিনি। এ সময় বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান ছিদ্দিকী, বিজিবি, কোস্ট

গার্ড, পুলিশসহ নানা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশ অংশের সব বিওপিতে ইতোমধ্যে জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে অন্যান্য বাহিনীর

জনবলও। টহল তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে নাফ নদে। সীমান্তের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বৃদ্ধি করা হয়েছে গোয়েন্দা কার্যক্রমও। বিজিবি রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা সর্বক্ষণিক টহল দান অব্যাহত রেখেছে। একইভাবে কাজ করছে কোস্ট গার্ড, আনসার ও পুলিশও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *