ইরানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত বেড়ে ২৫

ইরানের বন্দর আব্বাসের শহিদ রাজি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে আহতের সংখ্যা ৮০০ ছাড়িয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে দেশটির সবচেয়ে বড় ও আধুনিক বন্দরে বিশাল এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে। হরমুজগান প্রদেশের বিচার বিভাগের প্রধান মোজতবা গাহরেমানির বরাত দিয়ে তাসনিম নিউজ এজেন্সি বলেছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট নিহতের সংখ্যা ২৫।

সংবাদসংস্থাটি আরও জানিয়েছে, আহতদের শিরাজসহ বিভিন্ন শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহিদ রাজি বন্দরে এখনও ঘন ধোঁয়া উড়ছে। গতকাল বিস্ফোরণের পরপরই অনেকে ধারণা করতে থাকেন সেখানে নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারে।

তবে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মুখপাত্র হোসেন জাফারি জানিয়েছেন, নাশকতার আলামত পাওয়া যায়নি।

তিনি বার্তাসংস্তা আইএলএনএ-কে জানিয়েছেন, কনটেইনারের ভেতর থাকা রাসায়নিক বস্তুর কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। জাফারি জানান, বিস্ফোরণ নিয়ে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেগুলোতে বিশ্বাস না করে সরকারি তথ্যের জন্য সবাইকে অপেক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে সেখানে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার পর প্রকৃত হতাহতের তথ্য জানা যাবে। তিনি জানান, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, এটি প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও তা অনুভূত হয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ফোরণে আশেপাশের ভবনের ছাদ, জানালা উড়ে গেছে। পুড়ে গেছে গাড়ি। ঘটনাস্থল থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরের বাসিন্দারাও এই বিস্ফোরণের আঁচ পেয়েছেন।

দেশটির সরকারি বার্তাসংস্থা ফার্স নিউজ জানিয়েছে, ছোট একটি আগুন থেকে সবকিছুর সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুনটি দ্রুত সময়ের মধ্যে অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। যেটির প্রভাবে বিশাল বিস্ফোরণ হয়। সেখানকার আবহাওয়া অত্যাধিক গরম এবং দাহ্য প্রদার্থ থাকায় বিস্ফোরণের তীব্রতা বেশি ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, যেসব কনটেইনারে বিস্ফোরণ হয়েছে সেগুলোর ভেতর কী ছিল তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। তবে সেখানে সালফার জাতীয় পদার্থের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রথম বিস্ফোরণের পর সেখানে আরও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

ইরানি বার্তাসংস্থা ইরনা দেশটির সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, এটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দর, যা হরমুজগানের প্রাদেশিক রাজধানী বন্দর আব্বাস থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে এবং হরমুজ প্রণালির উত্তর দিকে অবস্থিত। যেখান দিয়ে পৃথিবীর মোট উত্পাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *