ধরিয়ে দিলেই ২০ লাখ টাকার পুরস্কার!

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ সম্প্রতি পাহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের পরিচয় প্রকাশ করেছে। এই হামলায় ২৬ জন, যাদের অধিকাংশই পর্যটক, নিহত হন। পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হামলায় অংশ নেয় চারজন সন্ত্রাসী—পাকিস্তানি নাগরিক আলি ভাই ওরফে তালহা, আসিফ ফৌজি এবং কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার আদিল হুসেন ঠোকার ও পুলওয়ামার আহসান। হামলাকারীদের ধরিয়ে দিতে তথ্য প্রদানকারীর জন্য ২০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

এনআইএ (ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি) সূত্রে জানা গেছে, হামলার অন্যতম মূল পরিকল্পনাকারী পাকিস্তানি নাগরিক হাশিম মুসা ওরফে সুলেইমান গত এক বছর ধরে কাশ্মীরে সক্রিয় ছিলেন এবং অন্তত তিনটি হামলায় জড়িত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT) ছাড়াও অন্যান্য পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

অপরদিকে, আলি তালহা নামের আরেক পাকিস্তানি সন্ত্রাসী প্রায় দুই বছর ধরে শ্রীনগরের দাচিগাম অরণ্যে সক্রিয় থেকে হামলার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন। পুলিশ আরও জানিয়েছে, আদিল হুসেন ঠোকার ২০১৮ সালে পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করে সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ নিয়েছিল এবং গত বছর কাশ্মীরে ফিরে এসে পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের স্থানীয় গাইডের ভূমিকা পালন করছিল।

পাহেলগাম হামলার তদন্তে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকা থেকে দুই হাজারের বেশি সাবেক জঙ্গি এবং ওভারগ্রাউন্ড কর্মী (OGW) আটক করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর অনেককেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী সম্ভাব্য লস্কর-ই-তৈয়বা ও তাদের ছদ্ম সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের (TRF) সদস্য ও সহায়ক কর্মীদের খুঁজে বের করতে ইন্টারনেটে এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহারের তথ্য অনুসন্ধান করছে।

হামলার প্রেক্ষিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা ব্যুরো (IB) এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা দিল্লিতে এক জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকে সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা, অনুপ্রবেশ ঠেকানো এবং সন্ত্রাসীদের সমর্থন কাঠামো ভেঙে ফেলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এদিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা (LoC) বরাবর বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে, যার জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। পাহেলগাম হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাকিস্তান আবারও কাশ্মীর হামলার আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে, তবে ভারত নিজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে হামলাকারীদের খুঁজে বের করার কাজে মনোনিবেশ করেছে।

পাহেলগাম হামলার জের ধরে কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যে পাঁচজন সন্ত্রাসীর বাড়িঘর ধ্বংস করেছে এবং অনেক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে যাতে আরও ষড়যন্ত্র উন্মোচন করা সম্ভব হয়। গোটা পরিস্থিতি নিয়ে এখন কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবল সতর্কতা ও নিরাপত্তা জারি রয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ https://www.tbsnews.net/world/who-are-3-terrorists-involved-gruesome-pahalgam-attack-jk-police-reveals-identities-1125496

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *