
বাংলাদেশের সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এবার এসেছে এক দারুণ সুখবর। মে মাসের শুরুতেই পাওয়া যাচ্ছে টানা তিন দিনের ছুটি, যা কর্মব্যস্ত জীবনে এক প্রশান্তির নিঃশ্বাস হয়ে এসেছে। বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছুটির দিন ‘বিশ্ব শ্রমিক দিবস’ বা মে দিবস এবার পড়েছে বৃহস্পতিবারে।
এর পরের দুই দিন শুক্রবার ও শনিবার – দেশের প্রচলিত সাপ্তাহিক ছুটি। অর্থাৎ ১ মে থেকে শুরু করে ৩ মে পর্যন্ত টানা তিন দিন সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ থাকবে। সরকারি ছুটির তালিকা ২০২৫ অনুযায়ী, ১ মে মে দিবস একটি সাধারণ ছুটি হিসেবে
ঘোষিত। যেহেতু এটি পড়েছে বৃহস্পতিবারে, তাই পরবর্তী দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে একটানা তিন দিনের ছুটির সুযোগ মিলেছে। ছুটির দিন নিয়ে এমন সুযোগ কর্মজীবীদের জন্য বিশাল স্বস্তির বিষয়।
মহান মে দিবস বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের প্রতীক, যেখানে শ্রমিকদের অধিকার, মর্যাদা এবং ন্যায্য সুযোগের দাবি তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশেও প্রতিবছর শ্রমিক সংগঠনগুলো র্যালি, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার মাধ্যমে দিনটি পালন করে থাকে।
বিশ্রামের এই সুযোগকে ঘিরে ইতিমধ্যেই অনেকেই পরিবার নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। আবার কেউ কেউ এই ছুটিকে ব্যবহার করছেন নিজের শখের কাজ বা সৃজনশীল কাজে মনোনিবেশ করতে। দেশের পর্যটন খাতে এমন ছুটিগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে থাকে।
বিশ্ব শ্রমিক দিবস বা মে দিবস মূলত ১৮৮৬ সালের ১ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের শ্রমিকদের আন্দোলনের স্মরণে পালিত হয়ে আসছে। তারা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। এই আন্দোলনই পরবর্তীতে বিশ্বজুড়ে শ্রমিক অধিকার রক্ষায় এক মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
বর্তমানে বাংলাদেশেও এই দিবসটি বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উদযাপন করা হয়। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই ছুটির মাধ্যমে দিনটি স্মরণ করা হয়। Wikipedia অনুসারে, মে দিবসের সূচনা বিশ্বব্যাপী শ্রমিক অধিকার ও সংহতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য এই ছুটির দিনগুলোর মাধ্যমে শুধু বিশ্রাম নয়, নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার সুযোগও তৈরি হয়। করোনা পরবর্তী সময়ে এমন সুসংবাদ কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতাও বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
বহু সরকারি কর্মচারী এই টানা ছুটির সুযোগে ঘরের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র যেমন কক্সবাজার, বান্দরবান, সুন্দরবন কিংবা সিলেটের চা বাগান এলাকাগুলোতে বেড়াতে যাওয়ার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।
আর যারা শহরের মধ্যে সময় কাটাতে চান, তাদের মধ্যে বই পড়া, সিনেমা দেখা, পারিবারিক সময় কাটানো এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নের কাজের দিকে ঝোঁক বেশি। অনেকে আবার নানা কোর্স বা স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিংয়ের জন্যও এই সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছেন।