ফায়ার সার্ভিসের সাবেক মহাপরিচালক আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ বলেছেন, যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে সেটার উৎস সাধারণত একটা হয়ে থাকে। কিন্তু যখনই একটার অধিক হয় বা দুই প্রান্তে হয়, তখন কিন্তু ওটা আমরা প্রথমে ধরে নেব যে সেটা
অস্বাভাবিক। তার সাথে অতি দ্রুততার সাথে যখন অগ্নিকাণ্ড ছড়িয়ে যায়, তখন যদি সেখানে কেমিক্যাল না থাকে তাহলে আমাকে একটু চিন্তা করতে হবে যে এটি কেন হলো। বেসরকারি টেলিভিশনের এক টকশোতে গত ২৬ ডিসেম্বর এসব কথা বলেন তিনি।
সাবেক মহাপরিচালক বলেন, ‘তৃতীয়ত হল যেখানে মানুষ না থাকে তাহলে সিগারেট ওখানে নিশ্চয়ই ছিল না, মশার কয়েল ছিল না, ওইখানে গরম করার জন্য হিটার ছিল না। তার মানে এগুলো বাদ যাচ্ছে। তাহলে থাকছে কি?
থাকছে কোনও অস্বাভাবিক কিছু কি না। একটা ভবনে যদি কেউ না থাকে সেখানে ইলেকট্রিসিটি বন্ধ থাকার কথা, তার মানে ইলেকট্রিসিটি থেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটার কথা না। আর সাপোর্টাইজ যখন হয় তখন সেটা পূর্ব পরিকল্পিত
হয় এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী যারা সাপোর্ট করবে তারা কিন্তু বিকল্প পথও খুঁজে। তাই এর উৎস বেশ কয়েকটা থাকে বা একইসাথে দেখা যাবে বা একটু পরে দেখা যাবে আরেক জায়গা থেকে উৎস। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখলাম সচিবালয়ের যে এত প্রশস্ত দুটা
পাশাপাশি বিল্ডিংয়ের অফিসগুলোতে ছড়িয়ে পড়ল অগ্নিকাণ্ড। এটা কিন্তু একটু অবশ্য অস্বাভাবিক। দ্বিতীয়ত হলো যে, আমরা প্রথমত ভাবছিলাম যে লিফ্টের কোণ থেকে যদি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকে, তার মানে লিফট থেকে নেমেই দেখা যাবে ওখানে
কিন্তু লবি আছে। ওখানে কিন্তু কোনও দাহ্য বস্তু নেই। তাহলে হঠাৎ করে দুই দিকেই একইভাবে অগ্নিকাণ্ড সূত্রপাত হলো। দুই দিকে একইসময়ে ধাবিত হল এবং দুই দিকে একদম চূড়ান্ত পথে চলে গেল।
তার পরেই একটা ফ্লোর থেকে আর একটা ফ্লোরে এ রকম করে চারটা ফ্লোরে অতি দ্রুততার সঙ্গে আগুন লেগে যাওয়াটা অবশ্যই অস্বাভাবিক। আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সাধারণত আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমি যেটা দেখেছি, এ রকম দেখিনি।
এটার সাথে যেটা হতে পারে যে অস্বাভাবিক হতে হলে যেমন কাগজ পুড়ানোর যে রকম জিনিস যেটা কিন্তু ওরকম ধাবিত হবে না। যদি কেমিক্যাল না থাকে। কিংবা ইলেকট্রিক্যাল কানেকশনগুলো এ রকম থাকতে হবে ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রিসিটি দিয়ে
পার হয়ে গেল। এরকমও হলো না। সচিবালয়ে আমরা জানি যে একটা কক্ষ থেকে আরেকটা কক্ষ পার হতে গেলেও সেখানে বিরতি লাগে। তিনি বলেন, ‘তাছাড়া যেটা হল যদি সাপোর্টাইজ হয় তাহলে একটা মোটিভ লাগবে।
মোটিভ হিসেবে আমরা কী করতে চাই? এখানে আসলে কি ছিল, সেখানে ছিল রাষ্ট্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রগুলো। আমরা জানি যে এতগুলো কমিশন হয়েছে এতগুলো তদন্ত হচ্ছে তারা কেউ না কেউ কোনও না কোনও ডকুমেন্টের প্রায় দরকার হচ্ছে
এবং সেটা ওই সচিবালয় থেকে সাপ্লাই দেওয়া হচ্ছে। তার মানে মোটিভ এখানে খুঁজলে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে যে নিশ্চয়ই রাষ্ট্রের গোপনীয় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এগুলো কি কি পুড়িয়ে ফেলার একটা প্রচেষ্টা এর ভিতরে কি নিয়োজিত আছে?
যেহেতু অন্যান্য জিনিস গুলো যে সাপোর্ট দিচ্ছে যে কিছুটা অস্বাভাবিকতা আছে।’ ফায়ার সার্ভিসের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, প্রথমেই তাদের মাথায় এসব নিয়েই কিন্তু নামা দরকার। তাহলে হবে এক্সপ্লোর করতে পারবেন।
অন্যদিকে যাবে না। বাদ দিতে দিতে যদি দেখা যায় না অন্য জিনিস পাওয়া যাচ্ছে যেখানে মানুষ ছিল তাহলে সে অনুযায়ী তদন্ত করতে হবে। সচিবালয়ে একটা বিল্ডং না, সবগুলো মিলিয়ে হচ্ছে একটা কিপ কেপি আই। আর এর সঙ্গে শুধু ফায়ার সার্ভিস নয়,
প্রত্যেকটা বাহিনী এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে। সার্ভিস প্রোভাইডাররা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে এবং সেনাবাহিনী রেসপন্সসিবল যেকোনো কেপি আইয়ে। কারণ, এটা আক্রান্ত হওয়া মানে দেশের বৃহৎ একটা সম্পদ আক্রান্ত হয়েছে। তখন কেউ ব্যর্থ হলে আরেকজন এসে চেষ্টা করবে। আর পরিকল্পনাগুলো খতিয়ে দেখতে হবে যে কি ধরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।