
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে গাজা সংকটকে কেন্দ্র করে ঢাকায় মার্কিন ব্র্যান্ড বয়কট ও ইসলামিস্ট উগ্রবাদের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়।
নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে এক সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশে প্রকাশ্যে ওসামা বিন লাদেনের ছবি ও নাত্সি প্রতীক বহনকারী বিক্ষোভ,
ইহুদিবিদ্বেষী বক্তব্য এবং কেএফসি-কোকাকোলার মতো মার্কিন প্রতিষ্ঠান বয়কটের ডাক কি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এছাড়া, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার আমলে ইসলামি উগ্রবাদ বৃদ্ধির আশঙ্কাও প্রশ্নে উঠে আসে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জবাবে বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো তাদের কর্তৃপক্ষের দেখভালের দায়িত্ব। তিনি স্বীকার করেন যে দেশটিতে জটিল চ্যালেঞ্জ রয়েছে,
তবে এর সমাধান বাংলাদেশের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকেই করতে হবে। তিনি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, নির্বাচন ও সুশাসনই সমস্যা মোকাবিলার চাবিকাঠি।
ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের একটি আদালত কর্তৃক যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ও আলোচিত হয়। মিলার এটিকে বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও গাজা সংঘাত নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ইসলামিস্ট উগ্রবাদের উত্থান ও বিক্ষোভে উগ্র প্রতীকের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে মার্কিন পণ্য বয়কটের প্রচারণা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক হয়, যা ইহুদিবিদ্বেষী বক্তব্যের সাথে যুক্ত বলে কিছু বিশ্লেষকের মত। সরকার এসব অভিযোগের ব্যাপারে স্পষ্ট অবস্থান নেয়নি, তবে বিরোধী দলগুলোর দাবি, শাসন ব্যবস্থার দুর্বলতাই এসব ঘটনাকে উসকে দিচ্ছে।
মিলারের বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্ক পর্যবেক্ষণের ইঙ্গিত থাকলেও, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ এড়ানোর নীতিই প্রাধান্য পায়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এখানকার জনগণই। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো যোগ করেন, বাংলাদেশীরাই এসব পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন এবং গণতন্ত্র ও সুশাসনের মাধ্যমেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব।