টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালী ১০০ জনের তালিকায় ড. ইউনূস

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৫ সালের ‘বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যক্তির’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

টাইমস ম্যঅগাজিন থেকে জানা গেছে, গত বছরের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণআন্দোলনের পর দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তাঁকে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী ড. ইউনূসের প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণের পর একটি পরিচিত নাম আবারও সামনে আসে—নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি বাংলাদেশকে, বাঙালি জাতিকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিতে নেতৃত্ব দেন।’

বার্তায় উল্লেখ করা হয়, দারিদ্র্য বিমোচনে ড. ইউনূসের যুগান্তকারী ভূমিকার কথা, বিশেষ করে ১৯৭০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দরিদ্র, বিশেষ করে নারীদের ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করার প্রয়াসের কথা।

হিলারি ক্লিনটন লিখেছেন, “দশকখানেক আগে, ইউনূস বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ক্ষমতায়িত করতে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ছোট ছোট ঋণের মাধ্যমে তিনি লক্ষ লক্ষ মানুষকে—যাদের ৯৭ শতাংশই নারী—ব্যবসা গড়ে তুলতে, পরিবারকে টিকিয়ে রাখতে এবং মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছেন।”

তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং বিশ্বব্যাপী তাঁর কাজের প্রভাবের কথাও স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, “আমি ইউনূসকে প্রথম দেখি যখন তিনি আরকানসাসে এসেছিলেন, তখন বিল ক্লিনটন গভর্নর ছিলেন এবং আমি তাঁর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। সেখানে আমাদের অনুরোধে ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রে গ্রামীণ ব্যাংক-মতো প্রকল্প চালু করার পরামর্শ দেন। এরপর থেকে বিশ্বের যেখানেই গেছি, আমি তাঁর কাজের অসাধারণ প্রভাব দেখেছি—জীবনের পরিবর্তন, সমাজের উন্নয়ন, আশার পুনর্জন্ম।”

বর্তমানে আবারো জনদৃষ্টি ও আলোচনার কেন্দ্রে থাকা ড. ইউনূস কেবল তাঁর অতীত সাফল্যের জন্যই নয়, বরং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন ও নাগরিক অধিকার রক্ষার জন্যও সম্মাননা পাচ্ছেন।

ক্লিনটনের ভাষায়, “এখন আবার ইউনূস তাঁর দেশের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশকে দমন-পীড়নের অন্ধকার থেকে বের করে এনে মানবাধিকারের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ এবং ন্যায়ভিত্তিক স্বাধীন সমাজ গঠনের ভিত্তি স্থাপন করছেন।”

উল্লেখ্য, টাইমস পত্রিকা প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রভাব, উদ্ভাবন ও নেতৃত্বের জন্য স্বীকৃত দিয়ে ১০০ ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *