বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরেছেন। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে একটি ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসন থেকে পাঁচবারের নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্যের আসার খবরে বিমানবন্দরে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয়। তাদের বেশির ভাগই মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মী।
পরে বিমানবন্দর থেকে কায়কোবাদ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি গণ-অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন সবার প্রতি তিনি নিজের ও দলের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যারা একত্র থেকে আন্দোলন করেছি, ব্যক্তি স্বার্থে যদি আমরা বিভক্ত হই, তাহলে ১৯৯৬ সালের মতো ঘটনা ঘটবে। তাহলে কিন্তু ২০০১ সালের সরকারের পরবর্তী পর্যায়ের যে ঘটনা, সেগুলো আবার ঘটতে পারে।
যেমনভাবে লগি-বৈঠার ঘটনা ঘটেছিল, আমরা একত্র না থাকলে তেমন ঘটনা আবার ঘটতে পারে। বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘১৯৯৬ সালে যদি আমরা ভুল না করতাম,
বিশেষ করে ইসলামী দলগুলো যদি ভুল না করত, আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় আসতে পারত না। এই ক্ষমতায় আসার মূলে কে এবং কারণ কী, সেটা আমাদের বুঝতে হবে। সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
’ তিনি বলেন, আগের সরকারের সময় যেভাবে গুম, খুন, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও নির্যাতন করা হয়েছে, এর যদি পুনরাবৃত্তি হয়, তাহলে তাদের আবার সেই অবস্থা ভোগ করতে হবে। জনগণকে এসব অন্যায়, অত্যাচার ও অবিচার থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কায়কোবাদ হাত জোড় করে আওয়ামী লীগের মতো কোনো অন্যায়-অত্যাচার, জুলুম-নির্যাতন না করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, দলের মধ্যে যারা এগুলো করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে।
শুধু তা-ই নয়, আজীবনের জন্য তাদের দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বলেন, ‘সংস্কার করবে গণতান্ত্রিক সরকার। যাদের ভোট দিয়ে জনগণ নির্বাচিত করবে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা হয়েছিল বিএনপি নেতা কায়কোবাদের। তবে তিনি রায় হওয়ার অনেক আগে থেকেই পলাতক ছিলেন। ১ ডিসেম্বর এ মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতের
দেওয়া সাজার রায় বাতিল করে রায় দেন হাইকোর্ট। এতে এই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কায়কোবাদসহ সব আসামি খালাস পান।