ভারতের কিসের এত ভয়! ড. ইউনূসের সাথে বৈঠকে কেন এত টালবাহানা মোদির? উদ্দেশ্য কী

ভারতের সাথে বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ক ভালো নেই। এর মধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সাথে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে চিঠি। তবে ভারত সেটি নিয়েই রীতিমতো টালবাহানা করছে এখন।

এপ্রিলে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ষষ্ঠ বিমস্টেক সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয় ঢাকার পক্ষ থেকে। ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস এর খবর অনুযায়ী বাংলাদেশের দেওয়া প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে না ভারতের দাদাবাবুরা।

যদিও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর আবার বলছেন ভিন্ন কথা। সেদেশের আরেক প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্যা হিন্দুকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মোদি সরকারের এই মন্ত্রী বৈঠকটির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেননি। তার মতে তারা এটি নিয়ে এখনো ভাবছেন। এখন প্রশ্ন হলো ভারতের এত ভয় কিসের বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের মুখোমুখি হওয়ার?

এর প্রধান কারণ স্বৈরাচার হাসিনা। বিশ্বের কোন দেশ গণহত্যা চালিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া হাসিনাকে আশ্রয় না দিলেও সাদরে তাকে বধু রূপে গ্রহণ করে নিয়েছে ভারতের মোদি সরকার। বাংলাদেশে হাসিনার বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই‘শো টি হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে এই গণহত্যাকারী স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে। সাভাবিকভাবেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের মুখোমুখি হলে হাসিনাকে ফেরত চাইবেন তিনি।

এর পাশাপাশি ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর হাসিনা ছাড়াও ফ্যাসিস্ট এর অনেক দোসরই পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে ভারতে, যারা প্রত্যেকেই একাধিক হত্যা মামলার আসামী। ভারত সরকার কিছুতেই চায় না ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনাকে ফেরত দিতে। তার সাথে সাথে হাসিনার খুনি দোসরদেরও বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে ওদের অনিহা। মূলত এ কারণেই গুজরাটের কসাইখ্যাত মোদি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার মুখোমুখি হতে রীতিমতো টালবাহানা করছেন।

গত দুই মাস আগেও বাংলাদেশ ভারতের কাছে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর জন্য কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছিল, কিন্তু দিল্লি সেই চিঠির কোনো উত্তর দেয়নি। বরং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন ইস্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করছে।

ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যমগুলো মিথ্যা বানোয়াট সংখ্যালঘু নির্যাতনের অপতথ্য, প্রোপাগান্ডা বিশ্বের বুকে তুলে ধরছে এটি নিয়েও আলোচনা করতে ছাড়বেন না ড. ইউনূস। এর পাশাপশি ভারতের দাদাবাবুরা মনে করে, এই বৈঠকে তিস্তা পানি সংকট এবং সীমান্ত নিরাপত্তা সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়গুলো উঠে আসবে।

বিশ্ব মিডিয়ার সামনে এই ইস্যু গুলো চলে আসলে এতে ধরা খেয়ে যাবে ভারতের চালবাজি। বাংলাদেশের সাথে ভারতের বন্দিবিনিময় চুক্তি রয়েছে এরপরও তারা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে।

হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করেছে বর্তমান সরকার এরপরও কোন আইনে হাসিনাকে রেখে দিয়েছে ভারতের মোদি সরকার, এই প্রশ্নটি যদি করে বসেন মাস্টারমাইন্ড প্রধান উপদেষ্ট ড. মোহাম্মদ ইউনূস তহলে কি উত্তর দিবেন মোদি? এক কথায় ড. ইউনূসের মুখোমুখি হতে রীতিমতো এখন ভয় পাচ্ছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *