ভারত পাকিস্তানকে ট্রাম্পের কড়া হুঁশিয়ারি

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত যখন অশান্তির আগুনে জ্বলছে, ঠিক সেই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক বিস্ফোরক মন্তব্য নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে।

তিনি জানান, এখন শুধু রাশিয়া নয়, চীন, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চান। ট্রাম্পের লক্ষ্য একটাই—পারমাণবিক দৌড় থামানো।

এই ঘোষণার পেছনে একটি ভয়াবহ বাস্তবতা রয়েছে। সুইডিশ থিংক ট্যাংক এসআইপিআরআই জানাচ্ছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ছিল প্রায় ১২,১২১টি, যার ৯০ শতাংশই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার হাতে।

তবে আশঙ্কাজনকভাবে চীনের মজুদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে চীনের পারমাণবিক ওয়ারহেড ছিল ৪১০টি, যা এক লাফে বেড়ে ৫০০টি হয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়াতেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত, ভারতের কাছে ১৭২টি, পাকিস্তানের কাছে ১৭০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে।

ভারত এবং পাকিস্তান একে অপরকে ঠেকাতে পারমাণবিক প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। ট্রাম্পের ভাষায়, চীনের কাছে এখনও তুলনামূলক কম পারমাণবিক অস্ত্র আছে, কিন্তু তাদের বৃদ্ধির গতি অত্যন্ত দ্রুত।

২০৩০ সালের মধ্যে তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার সমপর্যায়ে পৌঁছে যাবে। ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট সিজিং পিংয়ের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি, এবং তিনি এটিকে সমর্থন করেছেন।”

তবে বিশ্লেষকরা ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে নিছক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বলেই মনে করছেন। ভারতের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক রাহুল বেদী স্পষ্টভাবে জানান, ভারত কখনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ মেনে নেবে না, বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্র বা কাশ্মীরের মতো

স্পর্শকাতর বিষয়ে। পাকিস্তানি বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বলেন, ভারতের বিশাল প্রতিরক্ষা বাজেট এবং উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের জন্য অস্ত্র হ্রাস করা অসম্ভব। তার মতে, পাকিস্তান মনে করে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রই আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষা করছে।

চীনের অবস্থানও পরিষ্কার; তারা আগে রাশিয়া এবং আমেরিকার বড় আকারে অস্ত্র কমানো দেখতে চায়, তারপর অন্যরা চিন্তা করবে। তাহলে, প্রশ্ন ওঠে—ট্রাম্প কি পারবেন এই পারমাণবিক দৌড় থামাতে? এসআইপিআরআই এবং কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়া এমন একটি অঞ্চল যেখানে নিরাপত্তা প্রতিযোগিতা এবং আস্থার অভাব মিলে এক বিপজ্জনক বাস্তবতা তৈরি করেছে। ট্রাম্প চাইলেও, চীন, ভারত, এবং পাকিস্তানকে এক ছাতার নিচে এনে পারমাণবিক অস্ত্র হ্রাসে রাজি করানো এক কঠিন কাজ।

সূত্র : https://www.youtube.com/watch?v=yF35VYEbAys

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *