মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া সুরঞ্জন বালি কিভাবে ভারতের কারাগারে পৌঁছেন তার এক লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটে ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে। অপহৃত হওয়ার পর তার সাথে কী কী ঘটেছে তার বিশদ বর্ণনা তুলে ধরেন সুখরঞ্জন বালি।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘২০১২ সালের নভেম্বর মাসের ৫ তারিখে আমি ঢাকায় কোর্টে গিয়েছিলাম। আমার সাথে দুজন ব্যারিস্টার ও দুইজন উকিল ছিলেন। আমাদের গাড়ি দেখে কোর্টের গেটে আটকে ফেলা হয়, তখন আমার সাথে থাকা আইনজীবীদের সাথে
গেটের লোকদের তর্ক-বিতর্ক চলছিল। আমি গাড়িতে দুজন ব্যারিস্টারের মাঝে বসা ছিলাম, এ সময় কিছু সাদা পোশাকের লোক আমাকে নামিয়ে টানাটানি করতে লাগল।’ ‘তারা বলছিল, যার জন্য গাড়ি থামানো হয়েছে সেই লোক ইনি।
একেই আমাদের দরকার। সেই লোকরা আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে টেনে হিঁচড়ে পাঁচ-ছয় হাত দূরে অপর একটি গাড়িতে তুলে আমার চোখ বেঁধে ফেলে এবং একটু পরে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হয়।’
‘প্রায় আধঘণ্টা গাড়িটি চালানোর পরে সাদা পোশাকের লোকেরা আমাকে হাঁটাতে থাকে। এ সময় আমি নিচের দিকে নামার মতন অনুভব করি।
কিছুদূর হাঁটিয়ে একটা দরজা খুলে অন্ধকার জায়গায় আমাকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কোনো আলো সেখানে ছিল না, অথচ তখন সকাল ১০টা-১১টা বাজে।’
সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘আমাকে একটি খালি রুমে আটকে দেওয়া হয়। বাইরে কোনো শব্দ ছিল না ঘরে কোনো জানালা বা কোন ফাঁকা ছিল না যা দিয়ে কোনোরকম আলো ভেতরে আসতে পারে। তখন আমাকে মাঝে মাঝে অল্প করে খাবার দেওয়া হতো।
সেখানে কিছু লোক ছিল যারা আমাকে খাবার দিত বা পাহারায় আসত তারা নীল রংয়ের পোশাক পরা থাকত।’
তিনি বলেন, ‘এর দুদিন পর আমাকে সেই রুম থেকে বের করে অন্য একটি রুমে নেওয়া হয়। সেখানে আমাকে নিয়ে তারা জোর করে সাঈদী হুজুরের বিরুদ্ধে স্বীকারোক্তি নিতে চায়। সে রুমে অনেকগুলো ক্যামেরা লাগানো ছিল আমি দেখতে পাই।
আমার ভাইয়ের হত্যায় সাঈদী হুজুর জড়িত কি না জানতে চাইলে আমি যখন অস্বীকার করি এবং বলি যে যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে তাদের আমি চিনি। তাদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষ্য দিতে পারব,
কিন্তু তারা বারবার আমাকে সাঈদী হুজুরের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে বলে এবং এক পর্যায়ে তারা আমাকে মারধরসহ কারেন্টের শক দেয়, নির্যাতন করে।’
সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘তারা আমাকে একপর্যায়ে টাকা দিয়ে লোভ দেখানোর চেষ্টা করে এরপরও রাজি না হলে তারা অমানবিক নির্যাতন চালায়। সেখানে টানা কয়েকদিন ছিলাম। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতো। তখন তিন-চারজন লোক জিজ্ঞাসাবাদ করতো।’
সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘তাদের অত্যাচারে আমি অসুস্থ হয়ে যাই। কয়েকদিন সেখানে থাকার পর তারা একদিন সকাল ৭টা কি ৮টার দিকে আমাকে চোখ বেঁধে তারা গাড়িতে তোলে। আয়নাঘর থেকে যখন গাড়িতে ওঠানো হচ্ছিল।
তখন আমি ভয়ে ভয়ে জানতে চাই আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? জবাবে তারা বলেছিল, আমরা তোকে তোর দেশে নিয়ে যাব। বল কোথায় নামিয়ে দিলে তুই তোর বাড়ি চিনে যেতে পারবি। তখন বলি, বাগেরহাটে নামিয়ে দিলে আমি আমার বাড়িতে যেতে
পারবো। সারাদিন ধরে গাড়ি চালানোর পর মাঝে একবার ফেরিতে ওঠানো ও নামানো হয় সেটা আমি অনুভব করতে পারি। তিনি বলেন, ‘এক পর্যায়ে আবার গাড়ি চলতে শুরু করে দীর্ঘক্ষণ চালানোর পর দুইজন লোক গাড়িতে ওঠে।
এর কিছুক্ষণ পর ১০-১২ মিনিটের মতো হবে গাড়িটি চলতে চলতে থেমে যায়। এ সময় গাড়ি থেকে আমাকে নামানো হয় ও চোখ খুলে আমাকে সামনে আগাতে বলা হয়। সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘জায়গাটা বাগেরহাট কি না সেটা বুঝতে চেষ্টা করি।
আমি বুঝতে পারি যে, ওটা বাগেরহাট নয় এবং স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সামনে বিএসএফ, এটা বর্ডার এলাকা। সেখানে যারা আমায় নিয়েছে কান্না করতে করতে আমি বিএসএফ-এর হাতে তুলে না দিতে তাদেরকে অনুরোধ করি।
আমি বলি, এদের হাতে তুলে দিয়েন না। প্রয়োজনে আমাকে মেরে ফেলেন। এ কথা বলতে বলতে আমি মাটিতে পড়ে যাই। সুখরঞ্জন বলেন, ‘আমাকে নেওয়া গাড়ির লোকেরা জোর করে বিএসএফ-এর কাছে দিয়ে আসে আমায়।
এ সময় আমি দেখতে পাই গাড়িতে ৬-৭ জন সবুজ পোশাকের পুলিশের সাথে দুজন বিজিবি সদস্য আছেন। তখন আমি বুঝতে পারি গাড়ি থামিয়ে যাদের নেয়া হয় তারাই বিজিবি।’
সুখরঞ্জন বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নিরপরাধ নাগরিককে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আরেকটি দেশের রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে তুলে দেয় কেমন করে ?’
কান্না জড়িত কণ্ঠে সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘আমি যেতে না চাইলে জোর করে তারা আমাকে ধরে বিএসএফ সদস্যদের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ কিছু জিজ্ঞেস না করেই আমাকে প্রচণ্ড মারপিট শুরু করে। বিএসএফ হিন্দিতে কথা বলছিল এবং আমি
আমাকে না মারার জন্য বাংলায় বোঝাতে চেষ্টা করি। আমার কোনো কথা তারা বুঝতে পেরেছিল কি-না আমি আজও বুঝিনি। একপর্যায়ে বিএসএফ মোটা দড়ি দিয়ে পিছন দিক দিয়ে আমার হাত বেঁধে ফেলে।’
হাত বাধার সেই দাগ এখনো স্পষ্ট। সুখরঞ্জন বালি তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনায় বলেন, মোটা লাঠি দিয়ে বিএসএফ তাকে মারতে থাকে। এতে তিনি ডান হাতের কনুইতে প্রচণ্ড আঘাত পান। এখনো ডান হাত দিয়ে ভালোভাবে কোনো কাজ করতে পারি না। বিএসএফ-এর মারের পরে তিনি প্রায় তিন ঘণ্টা বেহুঁশ ছিলাম।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, ‘আমি বিএসএফকে বলতে থাকি যে আমি ইচ্ছা করে এখানে আসিনি কিন্তু আমার কথা বুঝতে না পারায় তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আমাকে মারার আর কোনো কারণ বুঝিনি। বিএসএফ-এর ক্যাম্পটির বিষয়ে জানতে পারি
এটি বৈকারী বাজার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-চব্বিশ পরগণা জেলার স্বরূপনগর থানা এলাকা। এরপর বশিরহাট জেলে আমাকে ২২ দিন রাখা হয়। সেখানে একদিন আমাকে কোর্টেও নেওয়া হয়। এরপর আসা হয় দমদম জেলে।’
সুখরঞ্জন বলেন, দমদম জেলে থাকাকালীন সেখানে এক বন্দি সম্পর্কে আমার ভাগ্নে হয় তাকে আমি দেখি। সে আমাকে চিনতে পারেনি। আমি সুযোগ বুঝে তাকে আমার পরিচয় দিলে সে আমায় জড়িয়ে ধরে বলে ‘মামা তুমি বেঁচে আছ। আমরাতো জানি
তুমি মারা গেছ।’ সে ভাগ্নে কারামুক্তির পর আমার বাড়িতে ও নিকটাত্মীয়দের আমরা বেঁচে থাকা ও ভারতের দমদম জেলে বন্দি থাকার কথা জানায়।
সুখরঞ্জন বলেন, ‘আমার বাড়ির লোকেরা ভারতে প্রশাসন ও মানবাধিকার সংস্থার সাথে যোগাযোগ করলে মানবাধিকার সংস্থা সহায়তায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালের প্রথম দিকে ৫ বছর জেল খেটে আমি মুক্ত হয়ে দেশে ফেরত আসতে পারি।’
তিনি জানান, দমদমে থাকাকালীন বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা আমার ইন্টারভিউ নিয়েছিল।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় কারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে সেই দৃশ্য আমি আমার বাড়ির পাশে টয়লেটের ভেতর লুকিয়ে থেকে নিজ চোখে দেখেছি। সেখানে সাঈদী হুজুরকে আমি দেখিনি। তখন এ নামে কাউকে আমি চিনতামও না।
উনি আমাদের এলাকা থেকে নির্বাচিত দুই দুবারের এমপি ছিলেন। তখন উনার সম্পর্কে জানি ও চিনতে পারি। সাঈদী হুজুর যখন এমপি ছিলেন তখন আমাদের মনে হতো যেন আমরা মায়ের কোলে আছি। হুজুর নিরাপরাধ নির্দোষ তার বিরুদ্ধে শত নির্যাতন সহ্য করেও আমি সাক্ষ্য দেইনি। আমাকে ক্ষুদিরামের মতো ফাঁসি দিলেও আমি প্রস্তুত ছিলাম।
তিনি বলেন, ভারত থেকে দেশে ফিরেও আমি নিজ এলাকায় পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে যেতে পারিনি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয় ও পরিচিতিদের সহায়তায় তাদের আশ্রয়ে ছিলাম।
সুখরঞ্জন বালি বলেন, পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি (সাবেক জিয়ানগর) উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের উমেদপুর গ্রামে আমার বাড়ি। আমি পেশায় কাঠমিস্ত্রি। আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। আমার ছেলেও কাঠমিস্ত্রির কাজ করতো। তাতে যে আয় রোজগার ছিল তাতে আমি পরিবার নিয়ে ভালোই চলতাম।
সাঈদী হুজুরের মামলায় সাক্ষ্য দেয়াকে কেন্দ্র করে আমাকে অপহরণ করে গুম করে নির্যাতন নিপীড়ন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং বিজিবি সহায়তায় বিএসএফের হাতে তুলে দিয়ে টানা ৫ বছর কারাবন্দী করে অবর্ণনীয় সাজা ভোগে বাধ্য
করা হয়। অনেক ভয় আতঙ্কের পরও সাঈদী হুজুরের মৃত্যুর পর তার জানাজায় উপস্থিত হয়েছিলাম। তারপর আবারো আমি নিরাপত্তার কারণে আড়ালে চলে যাই। তিনি বলেন, তার ওপর ঘটে যাওয়া এতো ঘটনার পর তিনি মানসিক ও শারীরিকভাবে স্বাভাবিক হতে পারেননি। নিজ পেশায়ও ফিরে যেতে পারেননি। ফলে অর্থ কষ্টে ও অভাবে দিন কাটছে তার ও পরিবারের।
সুখরঞ্জন বালি রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় অপহরণ, গুম এবং ৫ বছর কারাবন্দি থাকাসহ তার সাথে ঘটে যাওয়া সকল অন্যায়ের বিচার চান। ক্ষতিপূরণ চান রাষ্ট্রের কাছে।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী শাসনামলে গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৭ আগস্ট গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গঠন করে। কমিশনের প্রধান করা হয় বিচারপতি মইনুল ইসলাম
চৌধুরীকে। কমিশন গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, গুমের ঘটনায় কমিশনে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। দেশে গত ১৫ বছরে সংঘটিত বিভিন্ন গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘গুম কমিশনের প্রতিবেদন লোমহর্ষক। মানুষ মানুষের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংস হতে পারে, এতে আছে তার বিবরণ। অবিশ্বাস্য বর্ণনা!’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একথা বলেন।
গুম কমিশনের প্রতিবেদনের ভয়াবহতা তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, ‘সরকারের আক্রোশের শিকার হয়ে ঘটনাচক্রে যারা এখনো বেচে আছেন, তারা আজ পর্যন্ত মুখ খুলতে সাহস করছেন না। তাদের ভয় কিছুতেই কাটছে না। তাদের ভয়, হঠাৎ যদি ওই
জালেমরা আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে তাদের প্রতি এরা নৃশংসতম হবে। গত সরকারের ঘৃণ্যতম অধ্যায়ের ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে এই প্রতিবেদন অমর হয়ে থাকবে।’
উল্লেখ্য, সুখরঞ্জন বালি পশ্চিমবঙ্গের এক কারাগারে আছেন, এ খবর প্রথম প্রকাশ করে ঢাকার একটি ইংরেজি পত্রিকা। সুখরঞ্জন বালি বাংলাদেশে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধের মামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ছিলেন।
তিনি ২০১২ সালপর ৫ নভেম্বর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর আইনজীবীরা তখন অভিযোগ করেছিলেন যে তাকে সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
ইংরেজি দৈনিকটির প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের হয়ে একজন ভারতীয় নাগরিক কারাগারে সুখরঞ্জন বালির বক্তব্য নেন, যেখানে বালি বলেন যে তাকে বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ অপহরণ করে এবং পরবর্তীতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী
বিএসএফ-এর কাছে তুলে দেয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের বশিরহাটের স্বরূপনগর থানায় সুখরঞ্জন বালির বিরুদ্ধে যে এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) দাখিল করা হয়, তার কোথাও এমন কথা উল্লেখ নেই যে তাকে কেউ অপহরণ করেছিলেন বা
বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ তাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-চব্বিশ পরগণা জেলার স্বরূপনগর থানায় সুখরঞ্জন বালির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি দাখিল করেন বিএসএফ-এর ১৫২ নম্বর ব্যাটালিয়নের এ কোম্পানীর অধিনায়ক বি পি সিং।
সুখরঞ্জন বালি ভারতের কারাগারে বন্দী থাকার বিষয়ে তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য, কারামুক্ত হওয়ার পর সুখরঞ্জন বালির বক্তব্য এবং গুম কমিশনের ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের তথ্য একই চিত্র ফুটে উঠেছে।
দেশের অন্যতম ইসলামিক স্কলার দুই বারের সংসদ সদস্য জামায়াতের তৎকালীন নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া
হয়েছিল। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে তাকে আমৃত্য কারাদণ্ড দেয়া হয়। সাজা ভোগকরাকালীন ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট কারা হেফাজতে হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া ও ট্রাইব্যুনালের বৈধতা ও সাজা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বিভিন্ন দল সংগঠন ও শ্রেণী পেশার মানুষ। তবে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ এটি আমলে নেয়নি।