আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সাক্ষাৎকারে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী

কমফোর্ট ইরো’র সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান। প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা হবে না। তবে দলটির যে সমস্ত নেতা মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে তিনি জানান, নির্বাচন আয়োজনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি সীমিত আকারে সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত হবে।

তবে বৃহত্তর সংস্কার প্যাকেজ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে নির্বাচন আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে। জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানের অপরাধীদের বিষয়ে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন ড. ইউনূস।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট নেতাদের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, “বিষয়টি আলোচনার মধ্যে রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, ঐকমত্য কমিশন বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। তিনি বলেন, “জুলাই সনদ চূড়ান্ত ও স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা রয়েছে,

যা সরকারের নীতিগুলোকে দিকনির্দেশনা দেবে।” ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতা আতাউল্লাহর গ্রেফতারকে তারা শরণার্থী শিবিরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন।

এছাড়া মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণকারী আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা।

প্রফেসর ইউনূস জানান, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সহায়তা সংগ্রহে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আসন্ন জাতিসংঘ বিশেষ সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করবে।

কমফোর্ট ইরো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মোকাবিলায় তার সংস্থার সমর্থনের আশ্বাস দেন। এ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখার প্রত্যাশা রয়েছে। তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারিত বেশিরভাগ ভুল তথ্য ভারতীয় গণমাধ্যম থেকেই আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *