এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন মোদি?

রমজান এলেই ব্যবসায়িক চাঙা ভাব দেখা যায় বাংলাদেশ ও কলকাতার নিউ মার্কেটে। একসময় রমজান মাসে নিউ মার্কেটের দোকানগুলো থাকত সরগরম, পা ফেলার জায়গা মিলত না। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলত বেচাকেনা।

কিন্তু এবার দৃশ্যপট পুরোপুরি ভিন্ন। নিউ মার্কেটের অলিগলিতে যেন নীরবতা নেমে এসেছে, কোথাও কোনো কোলাহল নেই। এর পেছনে বড় কারণ ভারত সরকারের নেওয়া কঠোর ভিসানীতি। প্রতিবেশী বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে মোদি প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দেয়। পর্যটন ও মেডিকেল ভিসাতেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।

ফলশ্রুতিতে কলকাতার ব্যবসায়ীরা পড়েছেন বিপাকে। নিউ মার্কেট, ট্রেজার আইল্যান্ড, সিম্পার মল—সব জায়গায় বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে বেচাকেনা স্থবির।

ব্যবসায়ীদের মতে, নিউ মার্কেটের মোট ব্যবসার ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ নির্ভর করত বাংলাদেশি ক্রেতাদের ওপর, যা রমজানে আরও বেড়ে যেত। এবার সেই চিত্র উল্টো—হোটেল খালি, দোকান বন্ধ, পরিবহন ব্যবসাও ঝুঁকির মুখে।

কলকাতার প্রায় ১০০টির বেশি হোটেল এবং ৩,০০০ দোকান বাংলাদেশি ক্রেতাদের ওপর নির্ভরশীল। অনেকে দোকান ভাড়া চালাতে পারছেন না, কেউ কেউ দোকান বন্ধ করতেও বাধ্য হচ্ছেন। ক্ষোভ জমছে ব্যবসায়ীদের মনে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে এই পরিস্থিতি তৈরি করায় মোদি প্রশাসনের ওপর ক্ষুব্ধ অনেকে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মোদি প্রশাসন বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের আশায় এই কৌশল নিয়েছে, কিন্তু এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে বড় আঘাত এসেছে।

এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মোদি সরকারের মধ্যে টানাপোড়েন আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা দ্রুত সমাধান চান, কিন্তু মোদি প্রশাসন তাদের অভিযোগ শুনবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *