ভারত-বাংলাদেশের রুদ্ধদ্বার বৈঠক! জানা গেল পানি কম পাওয়ার কারণ

কলকাতার এক পাঁচ তারকা হোটেলের বলরুমে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন নদী কমিশনের বাংলাদেশ শাখার সদস্য আবুল হোসেন। একইসঙ্গে, ভারতের পক্ষ থেকেও সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।

দুপুর ২টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টার এই বৈঠকে মূলত গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন ও নবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি মৌসুমে গঙ্গার পানির প্রবাহ কম থাকায় দেশটি প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছে না, যার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিকাজ ও জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পানির স্বল্পতার কারণে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রতিনিধি দল গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়।

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন নদীর সংখ্যা ৫৪টি, এবং প্রতিটি নদী নিয়েই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা ও মতবিরোধ রয়েছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী নদীগুলোর খনন ও নিরাপত্তা ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করতে আগামী শুক্রবার যৌথ কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটির আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের সফরে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিশেষ কোনো আলোচনা করবে না বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে ২০২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দুই দেশের যৌথ কমিটি নতুন খসড়া চুক্তির খসরা চূড়ান্ত করবে।

পরবর্তী বৈঠক ও সম্ভাব্য সমাধান
বৈঠকের পর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগামী বৈঠকগুলোতে গঙ্গার পানি বণ্টন ছাড়াও অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, নদী খনন এবং নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানি প্রবাহ ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি যৌথ সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অভিন্ন নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে দুই দেশের সদিচ্ছার ভিত্তিতে এই সমস্যার একটি কার্যকর সমাধান আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *