
সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে, বিভিন্ন ঘটনাও সামনে আসছে। দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনির কাছে।
স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি এখন কেমন দেখছেন? মানে আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে বলছেন নাকি নিরাপত্তাহীনতার একটা প্রশ্ন ছিল?
স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতা আপনার প্রশ্ন, আমি তো নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন দেখছি না।
প্রশ্ন ছিল, প্রতিদিনই একটা না একটা অঘটন ঘটছে?
স্বরাষ্ট্র সচিব বলেন, হ্যাঁ, অঘটন ঘটছে। আমরা এরপরে ডেটা দিব। আমি গতকালকে ইফতার করেছি মোহাম্মদপুর থানায়। সেখানটায় ডিসেম্বর মাসে খুন হয়েছে দুটো, জানুয়ারি মাসে খুন হয়েছে একটা, ফেব্রুয়ারি যে গত মাসটা গেল, সে মাসে একটা মার্ডারও হয়নি। অথচ এর আগে, জুলাই এর আগে, এখানে প্রতি মাসে ১০ টার উপরে খুন হইতো।
আরো জানতে চাওয়া হয়, আমরা তো আমাদের কথাগুলো বলি না, আপনি যেটা বলছেন, যে এর আগে হয়নি, কিন্তু দেশী-বিদেশী অনেক মিডিয়াতেই কিন্তু কয়টা রেইপ হয়েছে, কয়টা খুন হয়েছে, এগুলো কিন্তু তথ্য এসেছে। আপনি যেটা বললেন, সেটার সাথে তাহলে সাংঘর্ষিক হয়ে যাচ্ছে না?
নাসিমুল গনি বলেন, সাংঘর্ষিক হচ্ছে না তো, সাংঘর্ষিক হচ্ছে কোথায়! আমি তো কোনটা অস্বীকার করছি না। আমি বলছি যে, এখনকার যে ফ্যাক্ট গুলো, সেগুলো বলছি। আগে কি ছিল, তাই বলছি।
জানতে চাওয়া হয়, জুলাইয়ের আগে বলছেন, কিন্তু জুলাইয়ের পরেও ঘটনা ঘটছে?
তিনি বলেন, হ্যাঁ, জুলাই’র পর আমি কম্পেয়ার করছি। এই সরকারটা কি পরিস্থিতিতে এসেছে জানেন আপনারা। আমরা একটা বিধ্বস্ত পুলিশ বাহিনী পেয়েছি, দয়া করে এই কথাগুলো কেটে দেবেন না। আমরা একটা বিধ্বস্ত পুলিশ বাহিনী পেয়েছি। এই বাহিনীটা যাদেরকে আমরা নিয়ে এসেছি, যারা ঢাকা শহর কোনদিন দেখে নাই। কারণ এসে রোজই দরখাস্ত করে যে, স্যার ঢাকাতে চলতে পারি না, এই হয় না, নানা রকম সমস্যা পুলিশের। তো এই সমস্ত লোকগুলো এসছে। তারা এই জায়গাগুলো চিনে এখন কাজকর্ম করছে। আস্তে আস্তে তারা ‘দে হ্যাভ গট এ কন্ট্রোল ওভার দি হোল এরিয়া এবং এগুলা ডেভলপ করছে।
প্রতিদিনই উন্নত হওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা নতুন রকম সমস্যা আসছে, নতুন কৌশল ব্যবহার করছি। আগে কিশোর গ্যাং এরকম ব্যাপার ছিল না, ছেলে কয়টা অল্প বয়সে ছেলে দৌড়াচ্ছে এখন। আমার ভারী বুট পড়া পুলিশ তার পিছনে দৌড়াইতে পারে না। তো আমরা এটার জন্য কি ব্যবস্থা করা যায়, সেই ব্যবস্থা করছি।
প্রশ্ন ছিল, আমরা অপারেশন ডেভিড হান্ট নামে যৌথবাহিনীর যে অভিযান ছিল আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের জন্য, সেটা আপনারা আরো কঠোর হচ্ছেন?
জবাবে তিনি বলেন, আগে যা ছিল তাই, কঠোর কি হওয়ার আছে! কঠোর হওয়ারও কিছু নাই মানে কোমল হওয়ারও কিছু নাই, যেটুকু প্রয়োজন, সেইটুকুই করছি আমরা।
বাংলাদেশে সাধারণত এই মব তো অর্গানাইজড কিছু থাকে না। একজন কেউ একটা হুজুগ তুলে দেয়, আমরা সেই হুজুগের এটা, সব হঠাৎ করে ঘটনা। এটা অর্গানাইজ তো কেউ করে নাই। মেয়েগুলো ওখানে খুব অর্গানাইজড হয়েছে, যে অনেক বুঝতে হবে আমার, এরকম কোন ইচ্ছাতে বসে নাই বলে আমার ধারণা। এবং লোকগুলো যে খুব অর্গানাইজ, দৌড়ে এসে করছে, তাও না। এগুলো তো আগে থেকে প্রেডিক্ট করা সম্ভব না, যে কোথায় কি হয়! এবং ঘটনার একেকজনের উস্কানিতে একেক রকম হয়।
আমরা এই ধরনের ঘটনার জন্য, আমরা জেনারেলি অ্যাপিল করছি যে, মানুষকে রাইম এন্ড রিজন বুঝতে হবে। মানুষের অপরের রাইটসকে সম্মান জানাতে হবে নাগরিক হিসেবে। কোনটা অপরাধ, কোনটা অপরাধ না, এটা বুঝতে হবে। এবং সকলের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা থাকতে হবে।