চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫: আজ মুখোমুখি ভারত-বাংলাদেশ

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এ নিজেদের প্রথম ম্যাচে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ ও ভারত। আয়োজক দেশ পাকিস্তানে খেলার ব্যাপারে সম্মত না হওয়ায় ভারতের ম্যাচগুলো হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি হবে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।

বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় শুরু হবে এই ম্যাচ।

বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি হচ্ছে এক পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে দুই দেশেরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন পর্যায় থেকে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ও ভারত পাশাপাশি দুই দেশ এবং প্রতিবেশী দেশগুলো যেকোনো খেলায় মুখোমুখি হলে একটা রাজনৈতিক আবহ তৈরি হতে দেখা যায়। তার ওপর পাঁচই আগস্টের পর দুই দেশের মধ্যে ওয়ানডে সংস্করণে প্রথম সাক্ষাৎ এটি।

এর আগে, গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টতে একদমই প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ।

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ থাকলে বাংলাদেশের সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি প্রত্যাশা উঁকি দিতে দেখা যায়। যদিও ক্রিকেটীয় বাস্তবতায় বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে পরিসংখ্যান ও শক্তিমত্তার দিক থেকে। কিন্তু প্রতিপক্ষ ভারত বলেই কি না একটা ‘দেখিয়ে দেয়ার প্রবণতা’ দেখা যায়।

বাংলাদেশের ক্রিকেট সাংবাদিক সাব্বির হোসেন বলেন, “দর্শকরা আগ্রাসী কিছু মুহূর্ত উপভোগ করতে তাকিয়ে থাকবে। ক্রিকেটারদের মনের রাজনৈতিক ভাবনা কী সেটা তো আসলে বলা যায় না। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ থাকলে দর্শকরা মাঠে তাকিয়ে থাকে আলাদা কিছু আগ্রাসনের মুহূর্ত থাকবে।”

নিয়মিত দর্শক জাকির হোসেন বলেন, “দুই দেশের ম্যাচ থাকলে আমরা আলাদা আগ্রহ নিয়ে টিভির সামনে বসি। ভারত অনেক ইস্যুতে আমাদের সাথে বড় ভাইয়ের মতো আচরণ করে বলেই আমরা চাই ক্রিকেটাররা যাতে দেখিয়ে দেয়, আমরাও কম না।”

ভারতের সমর্থকরাও বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ থাকলে মুখিয়ে থাকেন। গত কয়েক বছরে বড় আসরে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের ভিউয়ারশিপ অনেক সময় পাকিস্তান-ভারত ম্যাচকেও ছাপিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে সম্প্রচার সংস্থাগুলো।

এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গ্রুপ ‘এ’ তে আছে বাংলাদেশ ও ভারত, এই গ্রুপের বাকি দুইদল পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।

পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ৫০ ওভারের ক্রিকেটে জয়ের চেয়ে বেশি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। এই সময়ে ১২ ম্যাচ খেলে চারটিতে জয় ও ৮টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে শ্রীলংকার কাছে ২-১ ব্যবধানে জয় ছাড়া, অন্য তিনটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হেরেছে টাইগাররা।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। যা ছিল টাইগারদের শেষ ওয়ানডে সিরিজ।

এমন পরিস্থিতিতে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মুরালি কার্তিক ক্রিকেট পোর্টাল ক্রিকবাজকে দেয়া এক প্রেডিকশনে বাংলাদেশকে ‘ডার্ক হর্স’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, এই ধরনের দল যে কোনও সময় চমকে দিতে পারে।

বাংলাদেশকে সেমিফাইনালের কাতারে রাখতে চাইছেন মুরালি কার্তিক তবে ক্রিকবাজের বাকি বিশ্লেষকরা কার্তিকের সাথে দ্বিমত পোষণ করছেন। বিরেন্দর সেহওয়াগ, দিনেশ কার্তিকরা বলছেন ‘ডার্ক হর্স’ আফগানিস্তান। ২০২৩ বিশ্বকাপেও আফগানিস্তান নজর কাড়া ক্রিকেট খেলেছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশ ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর চারটি ওয়ানডে সিরিজের মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে, শেষ ছয় সিরিজেও সেটিই বাংলাদেশের একমাত্র জয়।

অথচ এক সময় বলা হতো ওয়ানডে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে সেরা ফরম্যাট। এখন সেই ফরম্যাটেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ‘সবচেয়ে খারাপ দল’ হিসেবে একটা সিরিজ খেলতে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *