সেই সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডেও জড়িত ছিল হাসিনা, এবার বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিচার বা সঠিক তথ্য উদঘাটন হয়নি। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় তাদের।

এতদিনে তদন্তের জন্য ১৫৫ বার সময় নেওয়া হলেও আদালতে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি তদন্ত সংস্থাগুলো।

প্রথমে থানা পুলিশ, পরে ডিবি এবং সিআইডি এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নেয়। বর্তমানে র‍্যাব তদন্ত করছে। তবে এত বছর পরও হত্যার মোটিভ বা প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যেই সম্প্রতি একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় মামলাটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ফাঁস হওয়া অডিওতে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নূরনবী চৌধুরী শাওনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অডিওতে দাবি করা হয়েছে, সাগর-রুনি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের একটি এক্সক্লুসিভ ভিডিও পেয়েছিলেন। সেই ভিডিও সিডি আকারে প্রস্তুত করার জন্য একটি স্টুডিওতে পাঠানো হয়েছিল, যা পরে ফাঁস হয়ে যায়।

অডিওতে আরও বলা হয়েছে, সাগর-রুনিকে হত্যার জন্য একটি পরিকল্পিত মিশন পরিচালিত হয়, যা ছিল কমান্ডো স্টাইলে। সন্দেহ করা হচ্ছে, একটি বিশেষ দলের মাধ্যমে জানালার মাধ্যমে ফ্ল্যাটে ঢুকে এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।

অডিও অনুযায়ী, হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ, সাগর-রুনির কাছে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফুটেজ ধ্বংস করার জন্যই তাদের হত্যা করা হয়।

এখন পর্যন্ত এই মামলায় বিভিন্ন পর্যায়ের ১৬০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে এতদিনেও তদন্তকারীরা কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জন করতে পারেনি। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এই মামলার তদন্তে প্রভাব খাটানো হয়েছে।

সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের অনেকেই মনে করেন, সরকারের প্রভাব ও সংশ্লিষ্টতার কারণে সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত শুরু থেকেই বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছিলেন, “৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের ধরা হবে।” তবে সেই ৪৮ ঘণ্টা এক যুগের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত সাগর-রুনির পরিবার ও সহকর্মীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *