ইউনুসের বক্তব্যে মুগ্ধ আসিয়ান নেতারা: সদস্যপদ দেয়ার আহ্বান বাংলাদেশকে

বুধবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সামিটে আসিয়ান নেতাদের উদ্দেশ্যে ড. ইউনুস বলেন, বাংলাদেশকে আসিয়ানের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হলে পারস্পরিক উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ সংস্থা আসিয়ানের সদস্য নয় বাংলাদেশ।

ড. ইউনুস বলেন, “আমি নিজেকে ব্যক্তিগতভাবে আসিয়ানের অংশ মনে করি। আমার কাজের শুরু থেকেই এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। মালয়েশিয়ার মাধ্যমে আমাদের মাইক্রোক্রেডিট প্রকল্প শুরু হয়, যা পরে ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ আসিয়ান অঞ্চলের অন্যান্য দেশে সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে।

এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের কার্যকরী ও মানসিক সংযোগ রয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভিয়েতনামের নারী নেতারা বাংলাদেশে এসে সামাজিক ব্যবসার মডেল শিখে সফলভাবে তা বাস্তবায়ন করেছেন।

ড. ইউনুস বলেন, “আমরা কি পশ্চিমা উন্নয়ন মডেল অনুসরণ করব, নাকি নিজেদের পথ নির্ধারণ করব? আমার মতে, আমাদের নিজস্ব মডেল তৈরি করা উচিত, যেখানে সম্পদের ন্যায়বিচার এবং সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি হবে।”

ড. ইউনুসের বক্তব্যে উঠে আসে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে একটি সৃজনশীল সমাজ গড়ার প্রয়োজনীয়তা। তিনি বলেন, “শিক্ষাকে এমনভাবে সাজাতে হবে, যেখানে ডিগ্রি শুধুমাত্র চাকরির জন্য নয়, বরং উদ্যোক্তা এবং সৃজনশীল দক্ষতা তৈরিতে সহায়ক হবে।”

ড. ইউনুসের বক্তব্যে আসিয়ান নেতারা বেশ অনুপ্রাণিত হন। তিনি বলেন, “আমরা আসিয়ানের সদস্য হতে উদগ্রীব এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য হলো এমন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, যা বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় হবে।

বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশায় ড. ইউনুস বলেন, “সমাজে ন্যায়বিচার এবং সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে আমরা একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে পারি। পূর্বের ভুলগুলো এড়িয়ে, আমাদের নতুন পথে এগোতে হবে।”

ড. ইউনুসের এই দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্ভাবনী পরিকল্পনা, আসিয়ান নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে নতুনভাবে ভাবাতে অনুপ্রাণিত করেছে। বাংলাদেশ ও আসিয়ানের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাবনাগুলো নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে এ অঞ্চলের উন্নয়নের নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *