খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শুরু, যা জানা গেল চিকিৎসক সম্পর্কে

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যের বিশেষায়িত হাসপাতাল লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে হাসপাতালটিতে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে অধ্যাপক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদ্‌রোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। দ্য লন্ডন ক্লিনিকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী, অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি একজন স্বনামধন্য লিভার বিশেষজ্ঞ। লিভারের ভাইরাসজনিত রোগ নিয়ে কাজের জন্য তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ইউনিভার্সিটি কলেজ ডাবলিনে প্রশিক্ষণ নেয়ার পর, তিনি লন্ডনে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন।

২০০৯ সালে বার্টস অ্যান্ড দ্য লন্ডন স্কুল অব মেডিসিন অ্যান্ড ডেন্টিস্ট্রিতে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। প্রফেসর প্যাট্রিক কেনেডি ক্রনিক হেপাটাইটিস বি (সিএইচবি) রোগ নিয়ে গবেষণা করেছেন। তার এ গবেষণার প্রধান লক্ষ্য ছিল লিভারের ভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশেষ পদ্ধতির বিকাশ ঘটানো। এ বিষয়ে ২০০টির বেশি গবেষণাপত্র, ৯০টির বেশি পিয়ার রিভিউড আর্টিকেলসহ একাধিক বই লিখেছেন প্যাট্রিক কেনেডি। তিনি হেপাটোগ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি নিয়েও একটি বই সম্পাদনা করেছেন।

ওয়েবসাইটের তথ্যানুযায়ী প্রফেসর কেনেডি একজন ফিজিশিয়ান কনসালট্যান্ট এবং হেপাটোলজিস্ট হিসেবে আছেন। তিনি তরুণদের লিভার রোগ নিয়ে কাজ করছেন। পেশাদার ক্রীড়াবিদ ও প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের ক্লাবগুলোতেও তিনি লিভার রোগ নিয়ে কাজ করছেন।

তিনি এসব প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড়দের লিভার রোগ নিয়ে পরামর্শ ও চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। প্রফেসর কেনেডি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একজন বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা এবং এইচবিভি ক্লিনিক্যাল গাইডলাইন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া ইউরোপীয় লিভার রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের এইচবিভি ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিস গাইডলাইন কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন।

ইউনাইটেড কিংডম অ্যাডভাইজরি প্যানেলের (ইউকেএপি) হয়ে রক্তের ভাইরাস রোগ নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়ে থাকেন প্রফেসর কেনেডি। তিনি ব্রিটিশ ভাইরাল হেপাটাইটিস গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান। প্রফেসর কেনেডি লিভারের ভাইরাল রোগের অভিনব থেরাপি নিয়ে কাজ করছেন।

তিনি এই রোগের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল থেরাপির ফেজ ১, ২ ও ৩-এর প্রধান। প্রফেসর কেনেডি এইচবিভি অ্যান্ড মি নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি তাঁর গবেষণা ও রোগীদের সঙ্গে সর্বাত্মক যোগাযোগ রেখে স্বাস্থ্যসেবার উন্নতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রফেসর কেনেডির রোগী দেখার ফি ৩৫০ পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫২ হাজার ৫৪৯ টাকা প্রায়। রোগীর ফলোআপে ফি নেন ২৫০ পাউন্ড বা ৩৭ হাজার ৫৩৫ টাকা।

এর আগে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে অবতরণের পর সেখান থেকে সরাসরি ‘লন্ডন ক্লিনিকে’ পৌঁছান খালেদা জিয়া। বুধবার বাংলাদেশ সময় পৌনে ৫টার দিকে তারেক রহমান নিজে গাড়ি চালিয়ে বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *