যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যদি তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনী দৌড়ে থাকতেন, তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করতে পারতেন এবং নভেম্বরের নির্বাচনে পুনরায় জয়ী হতে পারতেন। তবে তিনি এ-ও বলেছেন, তিনি নিশ্চিত নন যে আরেকবার পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করতে পারতেন কিনা। বুধবার প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব ছাড়তে যাওয়া ৮২ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট নেতাকে ইউএসএ টুডে প্রশ্ন করেছিল, তিনি কি মনে করেন, গত নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া তার জন্য বাস্তবসম্মত ছিল? বাইডেন এর উত্তরে অজ্ঞাত জরিপের উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি মনে করি, হ্যাঁ।
’
বাইডেন আরো বলেন, ‘আমি সত্যিই মনে করতাম, তার (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বিরুদ্ধে জয়ের সবচেয়ে ভালো সুযোগ আমার ছিল। কিন্তু আমি ৮৫ বা ৮৬ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট হতে চাইনি। তাই আমি নেতৃত্বের দায়িত্ব হস্তান্তর নিয়ে কথা বলেছিলাম। এখন পর্যন্ত ভালো আছি। তবে কে জানে আমি ৮৬ বছর বয়সে কেমন থাকব?’
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রবীণ প্রেসিডেন্ট বাইডেন বারবার তার মানসিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের পেছনে বড় কারণ ছিল একটি বিতর্ক, যেখানে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার পুনর্নির্বাচনের যুক্তি উপস্থাপনে ব্যর্থ হন। এ ছাড়া বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন অনেক কম সাক্ষাৎকার ও সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রোনাল্ড রিগানের পর থেকে এত কম গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি আর কোনো প্রেসিডেন্ট।
ইউএসএ টুডে ছিল একমাত্র প্রিন্ট মিডিয়া, যারা বিদায়ি প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছে। বাইডেন যখন তার চার বছরের মেয়াদের আফসোস নিয়ে কথা বলেন, তখন তিনি বিতর্কে তার ব্যর্থতা বা এক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার প্রতিশ্রুতি ভাঙার বিষয়টি উল্লেখ করেননি। বরং তিনি ভুল তথ্য ও ধীরগতির অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো নিয়ে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যদি আমরা এসব প্রকল্পে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারতাম, তবে আমরা অনেক ভালো অবস্থানে থাকতাম।’
এদিকে ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে, বিশেষ করে তিনি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর যেসব ব্যক্তিকে তার শত্রু মনে হতে পারে, তাদের জন্য আগাম ক্ষমা প্রদানের বিষয়টি। বাইডেন নিশ্চিত করেন, তিনি এই বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন, তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
বাইডেন জানান, নির্বাচনের পর ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময় তিনি ট্রাম্পকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যেন তিনি প্রতিশোধের রাজনীতি থেকে বিরত থাকেন। তিনি বলেন, ‘এটি তার নিজের স্বার্থের জন্যও বিপরীতমুখী হবে।’ তবে ট্রাম্প এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি।
নিজের উত্তরাধিকারের বিষয়ে বাইডেন জানান, তিনি চান, তাকে এমন একজন নেতা হিসেবে স্মরণ করা হোক, যিনি মহামারি-পরবর্তী অর্থনীতির পুনর্গঠন ও যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক নেতৃত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেছিলেন।
বিদায়ি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এটাই ছিল আমার আশা। আমি চাই, ইতিহাসে এটি রেকর্ড হোক, আমি সততা ও নৈতিকতার সঙ্গে (কাজ) করেছি এবং আমার মনের কথা স্পষ্টভাবে বলেছি।’