বাংলাদেশে বন্দী অবস্থায় ভারতীয় জেলেদের মোটা লাঠি দিয়ে মেরেছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

দীর্ঘ তিন মাস বাংলাদেশের কারাগারে আটক থাকার পর ভারতের ৯৫ জন মৎস্যজীবী রবিবার ভারতে ফিরেছেন। জলসীমা আইন লঙ্ঘনের কারণে তারা বাংলাদেশে বন্দী ছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর তাদের সুন্দরবনের গঙ্গাসাগরে সংবর্ধনা ও আর্থিক

সহায়তা প্রদান করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, বন্দীদশায় কয়েকজন মৎস্যজীবীকে বাংলাদেশে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে।

বাংলাদেশে বন্দী অবস্থায় ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মোটা লাঠি দিয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সোমবার (৬ জানুয়ারি) গঙ্গাসাগরে আয়োজিত এক প্রশাসনিক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি দেখলাম, কয়েকজন মৎস্যজীবী খুঁড়িয়ে

হাঁটছেন। জিজ্ঞেস করলে তারা কিছু বলতে চাইলেন না। পরে জানতে পারি, তাদের কয়েকজনকে দড়ি দিয়ে বেঁধে মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। অনেকের কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট রয়েছে। তারা জামাকাপড় পরে থাকায় আঘাতের চিহ্ন বাইরে থেকে বোঝা যায় না।

মমতা আরও বলেন, আমি জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছি, আহত মৎস্যজীবীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। আমাদের মৎস্যজীবীদের বলব, কখনও যেন দেশের সীমানা না ছাড়েন। জীবনের চেয়ে মাছ বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সম্প্রতি বাংলাদেশি একটি ট্রলার ভুলবশত ভারতের সীমানায় প্রবেশ করেছিল। তাদেরও অসুস্থ অবস্থায় পাওয়া যায়। আমরা চিকিৎসা করিয়ে তাদের যত্নে রেখেছিলাম এবং পরে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাই।

দুই দেশের মধ্যে মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় থাকা উচিত। তবে, আমাদের মৎস্যজীবীদের যে দুর্দশা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। মুক্তিপ্রাপ্ত মৎস্যজীবীদের আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি জানান, রাজ্য সরকার “সমুদ্রসাথী” প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের সাহায্য করবে। এছাড়া, ৬০ বছরের বেশি বয়সী মৎস্যজীবীদের জন্য পেনশন চালু করা হয়েছে। আহত মৎস্যজীবীরাও এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পাবেন।

দীর্ঘ তিন মাস পর প্রিয়জনদের ফিরে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৎস্যজীবীদের পরিবার। তাদের ভবিষ্যৎ জীবন আরও নিরাপদ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্য প্রশাসন।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, মৎস্যজীবীদের সুরক্ষা ও জলসীমা অতিক্রমের ঝুঁকি এড়াতে আরও কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *