গাড়ি নিয়ে খালেদের বাহাস, স্পষ্ট করে যা বললেন আহ্বায়ক হাসনাত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহকে বিতর্কিত করতে সামাজিক মাধ্যমে পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পরিচালিত বিভিন্ন ভুয়া আইডি থেকে তার দামি গাড়ি ব্যবহার করা নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এবার সেই বিষয়টি নিয়ে হাসনাতের সাথে বাহাসে জড়ালেন আলোচিত উপস্থাপক খালেদ মুহিউদ্দীন।

সম্প্রতি ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ টকশোতে এই প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি স্পষ্ট করেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এসময় দামি গাড়ি ব্যবহারের পেছনের কারণ বিশদভাবে খোলাসা করেন তিনি।

স্রোতারা বলছেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসররা মূলত ছাত্র-জনতার কাছে হাসনাতের গ্রহণযোগ্যতাকে বিতর্কের মুখে ফেলার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ধরনের প্রপাগাণ্ডা চালানো হচ্ছে।

টকশোতে খালেদ মুহিউদ্দীনের গাড়ি নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে হাসনাত বলেন, আমি লাস্ট ১৫ দিন ধরে প্যারাডো চড়ি। গাড়িটার দাম ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। হয়তো আগামীতে অডি চড়ব। খালেদ ভাই, আপনি এখন কী মডেলের গাড়ি ব্যবহার করেন?

খালেদ বলেন, নিউইয়র্কে গাড়ি নেই, জার্মানিতে ভক্স ওয়াগন ছিল। তখন হাসনাত বলেন, আপনার কি মনে হয় না আপনার মতো বাংলাদেশে হাসনাতের ১০০টা খালেদ ভাই আছে? যে তাকে গাড়ি দিতে পারে। তখন খালেদ বিষয়টি মেনে নিয়ে বলেন, আমার এগুলিতে আপত্তি নেই।

এবার হাসনাত বলেন, বাংলাদেশে এরকম ১০০টা ভক্স ওয়াগনের মালিক রয়েছে যারা হাসনাতে শুভাকাঙ্খী। তারা আমাদের গাড়ি পাঠিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামে নিয়েছে যেখানে আমাদের কথা বলা প্রয়োজন বলে তারা মনে করেছেন।

এরপর খালেদ জানতে চান, আপনি এখন প্যারাডো চড়ছেন। অডি চড়ছেন। মার্সিডিস চড়বেন। সেগুলো ঠিক আছে। কিন্তু আপনার সাথে কি এদেরই বেশি বন্ধুত্ব হচ্ছে রিক্সাওয়ালা বা টয়োটাওয়ালাদের চেয়ে?

হাসনাত জবাবে বলেন, আমার রিক্সাওয়ালাদের সাথেও সম্পর্ক আছে, আমার প্রত্যেক জনের সাথে সম্পর্ক আছে। খালেদ পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, যাদের প্যারাডো-বিএমডাব্লিউ আছে তারা কি হাসনাতের বেশি কাছে যেতে পারছে? জবাবে হাসনাত বলেন, আমি প্যারাডোটা নিয়েই রিক্সাওয়ালাদের কাছে যাচ্ছি, প্রান্তিক জনপদের কাছে যাচ্ছি।

খালেদ পেঁচিয়ে ধরে প্রশ্ন করেন, এই প্যারাডোটা কি একটা স্টেটমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করছেন? দেখাতে চাচ্ছেন, যে আপনার একটা প্যারাডো আছে। আপনি ইচ্ছে করলে তো একটা টয়োটা নিয়ে যেতে পারতেন।

হাসনাত বলেন, আমি এটা বুঝাতে চাচ্ছি, আমার সবকিছুতেই এক্সেস আছে, করোল্লা এক্স থেকে শুরু করে। যেমন মিডিয়াতে একটা প্রচার করা হচ্ছে, একটা প্রথিতযশা মিডিয়াতে নিউজ করা হয়েছে, হাসনাতের বাড়িতে ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। আবার নিউজের ভেতরে নিচে ছোট্ট করে লিখে দিয়েছে- এটা মিথ্যা।

খালেদ প্রশ্ন করেন, আপনি কি কখনও দেখেছেন কেউ বন্ধুত্বের বিনিময়ে কোনো কিছু আশা না করে? যারা আপনার সাথে এই বন্ধুত্বটা এখন করছে তারা আপনার কি কাছে কিছু আশা করে না?

জবাবে হাসনাত বলেন, না বন্ধুত্ব না। হাসিনার বিরুদ্ধে যারা আন্দোলনে আসছিল, মানুষতো টাকা নিয়ে আন্দোলনে আসছিল। এই টাকা কোনদিনের জন্য নিয়ে আসছিল? এই টাকা নিয়ে আসছে মানুষের জন্য। যদি দেশে পোলাপান না থাকে এই টাকা দিয়ে আমি করবো? ওই মানুষগুলো এখনও আছে।

তখন হাসনাতের ব্যাখ্যা মেনে নিয়ে খালেদ বলেন, রাইট।

উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে দাবি জানিয়ে ইন্টারনেটে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। গত অক্টোবর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. তারিকুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে সামাজিক

যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পোস্ট ও ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমের বাসা থেকে যথাক্রমে ২০০ ও ১০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান (ফ্যাক্ট চেক) রিউমর স্ক্যানার। তাদের অনুসন্ধানে জান যায়, ভিডিওটি ভুয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *