লন্ডনে টিউলিপকে বিনামূল্যে ‘ফ্ল্যাট’ দিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী, জানা গেল তার পরিচয়ও

লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিককে বিনামূল্যে একটি ফ্ল্যাট দিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। টিউলিপের খালা, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের ঘনিষ্ঠ লোকজনের সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর যোগাযোগ ছিল। ব্রিটেনের মন্ত্রিসভার সদস্য টিউলিপ ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। অথচ তার নিজের বিরুদ্ধেই এখন দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি ২০০৪ সালে কোনো ধরনের অর্থ প্রদান না করেই লন্ডনের কিংস ক্রসের কাছে দুই বেডরুমের একটি অ্যাপার্টমেন্ট গ্রহণ করেছিলেন বলে জানা গেছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই ফ্ল্যাটটি টিউলিপকে দিয়েছিলেন আবদুল মোতালিফ নামের এক আবাসন ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীর সঙ্গে তার বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। তার শাসনামলে বিরোধীদের কঠোর হাতে দমন করা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয় এবং গোপনে বন্দি করা হয়।

তার বিরুদ্ধে বিচারবর্হিভূত হ’ত্যাকাণ্ড চালানোরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৪০০ কোটি পাউন্ড আত্মসাৎ করেন এমন অভিযোগে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা।

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মাণে প্রায় ৪০০ কোটি পাউন্ড অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এতে নাম উঠে আসে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে এবং ব্রিটিশ লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকসহ তার পরিবারের পাঁচজন সদস্যের।

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদের মধ্যে অন্যতম। তবে টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছিলেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

তিনিসহ বাকি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তারা নিজেদের স্বার্থে ওই প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ধরেছিলেন। একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যবসায়ী আবদুল মোতালিফের জীবনের কঠিন সময়ে তাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিলেন টিউলিপের বাবা-মা।

সে কারণেই নিজের মালিকানায় থাকা একটি ফ্ল্যাট টিউলিপকে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ দিয়েছেন তিনি। এদিকে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে মোতালিফ নিশ্চিত করেছেন যে, ওই সম্পদ তিনি নিজে কিনেছিলেন। তবে এর বাইরে তিনি আর কিছু জানাতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *