
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি শহিদুর রহমান বদলির পর ফেসবুকে একটি রহস্যময় স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন। “বুঝলে বুঝ, না বুঝলে খেয়ে নে তরমুজ”-এই বাক্য ঘিরে এখন চলছে নানা গুঞ্জন ও জল্পনা।
শনিবার রাতে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুর রহমানকে। বদলি করে তাকে রংপুর রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে সংযুক্ত করা হয়। তার স্থানে দায়িত্ব পান পরিদর্শক (তদন্ত) সুজিত কুমার পাল।
আর ঠিক পরদিন সকালে ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাস ঘিরে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেন সদ্যবদলিকৃত ওসি। স্ট্যাটাসে শহিদুর রহমান লেখেন, “মিথ্যা গল্প সাজিয়ে লাভ নেই, উপকার আমারই হবে। প্রতিটি গল্পই এক একটা সাক্ষী।
বুঝলে বুঝ, না বুঝলে খেয়ে নে তরমুজ।”এই স্ট্যাটাস ঘিরে ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত ২ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও শহরের নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় ওসি শহিদুর রহমানের
বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তোলেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা। তাদের অভিযোগ ছিল-মামলা পরিচালনায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সাংবাদিকদের অভিযোগ শোনার পর তিনি বলেন,”এর আগে তার (ওসি শহিদুর) বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাইনি। আজ আপনারা অভিযোগ তুলেছেন, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।
অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাব। তারপর মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে ওসির আকস্মিক বদলি অনেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, রাজনৈতিক চাপের ফলেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বদলির বিষয় এবং ফেসবুক পোস্ট নিয়ে ওসি শহিদুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি জেলার কোনো পুলিশ কর্মকর্তা। তবে ওসির স্ট্যাটাস অনেক কিছু বলেও যেন কিছুই না বলার ইঙ্গিত দিয়েছে-এমনটাই বলছে স্থানীয় মহল।
মাত্র ছয় মাস আট দিন আগে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন শহিদুর রহমান। এমন স্বল্প সময়েই দায়িত্ব ছাড়তে হওয়ায় পুলিশ প্রশাসনের ভেতরে ও বাইরে অস্বস্তির আবহ সৃষ্টি হয়েছে।
‘খেয়ে নে তরমুজ’-এই বক্তব্য নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ একে সরস উপমা মনে করলেও, অনেকেই বলছেন, এটি আসলে একটি ব্যঙ্গাত্মক ইঙ্গিত, যার ভেতরে রয়েছে চাপা ক্ষোভ ও প্রতিবাদ।