বাংলাদেশে সবকিছুই কলমের জোরে হয়: সাকিব

২২ গজের লড়াইয়ে সাকিব আল হাসানের নাম এলেই প্রতিপক্ষের ক্রিকেটারদের বিশেষভাবে ভাবতে হয়, বিশেষ পরিকল্পনা করতে হয়। সেটি যেখানেই হোক। বাংলাদেশের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ, ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে কিংবা ঘরোয়া কোনো

টুর্নামেন্টে সাকিবের নাম এলেই মানসপটে ভেসে ওঠে একজন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ছবি। ক্রিকেট ক্যারিয়ারে বিভিন্ন উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে সাকিব এগিয়েছেন, হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সময়ের ব্যবধানে আবার আসনও হারিয়েছেন।

তবু পথচলা থেমে নেই। ক্রিকেটের লড়াই থেকে গেল বছর সাকিব যোগ দিয়েছিলেন রাজনীতির লড়াইয়ে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাকিব জয়ী হয়েছিলেন। ছয় মাস স্থায়ী হয়েছিল তার সেই

রাজনৈতিক যাত্রা। শেখ হাসিনার পতনের পরে তিনি আর বাংলাদেশে ফিরতে পারেননি। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। দীর্ঘদিন পরে নীরবতা ভেঙে সবকিছু নিয়ে মুখ খুলেছেন সাকিব। সম্প্রতি ঢাকার একটি ইংরেজি দৈনিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে সব বিষয়ে কথা বলেছেন। রাজনীতিতে আসার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন। এই মুহূর্তে ক্রিকেট নিয়ে ভাবছেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে খেলার স্বপ্ন এখনো লালন করছেন। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওঠা শেয়ার কারসাজি ও অন্যান্য অভিযোগের তদন্তে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন সাকিব।

রাজনীতিতে আসার বিষয়ে সাকিব ঐ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ব্যবস্থার দিকে তাকালে দেখা যাবে, এখানে সবকিছুই কলমের জোরে হয় এবং আইনের বাইরে যাওয়া যায় না। অবশ্যই ব্যতিক্রম আছে, কিন্তু সেগুলো কেবলই ব্যতিক্রম। এজন্য আমার রাজনীতিতে আসার কারণটি সহজ ও স্পষ্ট ছিল- আমি মাগুরার মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। সেজন্যই রাজনীতিতে আসা।’

শেয়ার কারসাজি নিয়ে সাকিবের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটি নিয়েও স্পষ্ট কথা বলেছেন। নিজে থেকে শেয়ার বাজারে কোনো ট্রেড করেছেন, এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারলে তাকে সাকিব সমস্ত সম্পত্তি দিয়ে দেবেন বলে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে কীভাবে ট্রেড করতে হয়, সেটি জানেন না বলে দাবি করেছেন সাকিব। তার পক্ষ থেকে বিনিয়োগ করার জন্য কাউকে টাকা দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন এই ক্রিকেটার এবং সেই টাকার পুরোটাই লোকসান হয়েছে বলে তিনি দাবি করছেন।

এ দিকে করোনার কারণে কাঁকড়ার ব্যবসায়ও তার লোকসান হয়েছে বলে জানিয়েছেন। সাতক্ষীরা উপকূলের দাতিনাখালি এলাকায় সাকিবের যে কাঁকড়ার খামার রয়েছে, সেটি পুরোপুরি তার নয়। সাকিব কেবল ৩৫ শতাংশের মালিক বলে দাবি করেছেন। বাকি ৬৫ শতাংশের মালিক যারা তাদের নাম উল্লেখ না করে কেবল সাকিবের নামই উল্লেখ করায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তিনি। সবকিছু নিয়ে কথা বলার সুযোগ চেয়েছেন সাকিব।

এ দিকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে এখনো খেলার স্বপ্ন দেখেন তিনি। এটি নিয়ে বিসিবি থেকে শুরু করে উচ্চমহলেও কথা বলেছেন। আরো এক থেকে দুই বছর খেলার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন এই ক্রিকেটার। এরপরে মাঠ থেকেই অবসরে যেতে চান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *