আজহারীর সানগ্লাস নিয়ে কেন এত মন্তব্য, যা জানা গেল

১২ এপ্রিল, ঢাকায় ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে ইসলামি স্কলারসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও জনসাধারণের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশে জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী চোখে একটি কালো সানগ্লাস পরিধান করেন। আর তা ঘিরেই শুরু হয় আলোচনার ঝড়। আলজাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনায়ন সায়ের সামী তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে এক পোস্টে আজহারীর সানগ্লাস নিয়ে মন্তব্য করেন।

জুলকারনায়ন লিখেন, “মার্চ ফর গাজা’র আয়োজকদের চোখে রেবান সানগ্লাস দেখে ব্যথিত হয়েছি। রেবানের মালিকানা প্রতিষ্ঠান ‘লাক্সোটিকা’ ইসরায়েলে বিনিয়োগ করে, যে কারণে অনেক সংস্থা ও গ্রুপ রেবান বর্জনের ডাক দিয়েছে।”

এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানান অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকি ভট্টাচার্য। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “যমুনা ইলেকট্রনিক্স ঈদে ডাবল খুশি অফার চালু করেছে—সিজন থ্রি! যেকোনো পণ্য কিনলেই নিশ্চিত ঈদ উপহার। আজহারী হুজুর ‘মার্চ ফর গাজা’য় চোখে একটা সানগ্লাস পড়েছেন—ভালোই লেগেছে, মাশাআল্লাহ। কচু খেতেই কেউ সেটা আবিষ্কার করেছে যে এটা রেবানের। এরপর বলা হচ্ছে, ওই কোম্পানি ইসরায়েলে বিনিয়োগ করেছে, তাই বয়কট করতে হবে!”

সায়েরকে ইঙ্গিত করে পিনাকি আরও বলেন, “আজহারী স্মার্ট, তরুণ, দেখতে ভালো—মাশাআল্লাহ। ভালো বাংলা-ইংরেজি বলতে পারেন। তাই বাঙালি এলিটদের জ্বালায় তাকে দেশ ছাড়া করেছিল। এখন আবার তাঁকে নিয়ে লাগছে!”

পিনাকি ভিডিওতে উল্লেখ করেন, রেবান সত্যিই বয়কটের তালিকায় আছে কিনা, তা যাচাই করা দরকার। তিনি দাবি করেন, জুলকারনায়ন সায়ের নিজে একটি ইসরায়েলি পত্রিকায় লেখেন—তাহলে ওখানে লেখায় সমস্যা নেই?

পিনাকি বলেন, “রেবান কোনো ইসরায়েলি কোম্পানি না। এটি ১৯৩৭ সালে আমেরিকায় ‘বাউস অ্যান্ড লম’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এটি পরতেন, এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনও। ১৯৯৯ সালে রেবান বিক্রি হয় ইতালির লাক্সোটিকা গ্রুপের কাছে। রেবানের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই।”

ভিডিওর শেষাংশে পিনাকি বলেন, “বয়কট মানে আবেগে ভেসে যাওয়া না। বয়কট হলো হিসেব করে ঘায়েল করার অস্ত্র। আজ যারা তথ্যের বদলে ট্রল ছুঁড়ে মারছে—একবার আজহারীকে, একবার পিনাকিকে—তারা ফিলিস্তিনের শত্রু, তারা ইসরায়েলের বন্ধু।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *