
ফিলিস্তিন মুসলিম বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ড, যাকে ইসলামে বিজয়ের ভূমি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অথচ আজ সেখানে চলছে নির্মম গণহত্যা। গাজার আকাশে-বাতাসে প্রতিদিনই ভেসে আসছে মৃত্যু আর ধ্বংসের খবর।
বিশ্বব্যাপী এই বর্বরতা দেখে কাঁপে না কারও মন—বিশেষ করে আরব বিশ্ব যেন চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। তবে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। যুদ্ধের শুরু থেকেই দেশটি স্পষ্টভাবে অবস্থান নিয়েছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। ৭ এপ্রিল দেশজুড়ে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল ছিল গোটা বাংলাদেশ।
রাজপথে নেমে এসেছিলেন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরাও আন্দোলনে অংশ নেন।
এ ধারাবাহিকতায় আজ, ১২ এপ্রিল, পালিত হচ্ছে ‘মার্চ ফর গাজা’। আয়োজক সংগঠন প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ-এর ব্যানারে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে শাহবাগ হয়ে মানিক মিয়া এভিনিউ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণজমায়েত।
এই আয়োজনে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছেন ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারী, জাতীয় ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, বক্তা শায়েখ আব্দুল্লাহ, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
আজহারী এক বিবৃতিতে জানান, “ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘটিত শতাব্দীর অন্যতম নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে আমরা এই ‘মার্চ ফর গাজা’ আয়োজন করেছি। ইনশাআল্লাহ আমি নিজেও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করব, আপনাদেরও আহ্বান জানাচ্ছি—দলে দলে যোগ দিন।”
আয়োজক সংগঠনের ফেসবুক পেজে দেখা গেছে, কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ আরও বহু ইসলামি চিন্তাবিদ, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক ও খেলোয়াড়। সবার কণ্ঠে একই বার্তা—“আমরা সবাই ফিলিস্তিন”।
এই ঐতিহাসিক কর্মসূচি যেন হয়ে উঠেছে নতুন এক বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি—একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি, যারা মানবতার পক্ষে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস গাজা থেকে ইসরায়েলে আক্রমণ চালালে ১,১৩৯ জনের প্রাণহানি ঘটে, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন সাধারণ মানুষ। এর প্রতিক্রিয়ায় ২৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ধ্বংসাত্মক বোমা হামলা ও সামরিক অভিযান শুরু করে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েলের এসব কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অনেক গণহত্যাবিরোধী রাষ্ট্র ও সংগঠন এ ব্যাপারে সরব।