যে কারনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা

সাফ কথা, আমার পাওয়ার চাই, আমার ক্ষমতা চাই। গণমাধ্যমে এমন কথা বহুবার বলেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্ত যা বলেননি তা হলো, আমার পুরস্কার চাই, আমার নোবেল চাই। অথচ এই নোবেল প্রাপ্তির জন্য এমন কোন কাজ নেই,

যা তিনি করেননি৷ তার এই নোবেল পুরস্কারে মোহই হুমকির মধ্যে ফেলেছে দেশের সার্বভৌমত্বকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নোবেল পুরস্কারের মোহটা শেখ হাসিনাকে পেয়ে বসেছিল ১৯৯৬ সালেই।

সেবার প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় এসেই পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর অনেকটা তড়িঘড়ি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সঙ্গে চুক্তি করেন তিনি। শান্তিতে নোবেল পাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে তিনি সেই চুক্তির নাম দেন,

পার্বত্য শান্তি চুক্তি। তারপর থেকে এই চুক্তিটিকে কাজে লাগিয়ে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেতে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেন তিনি। তাকে মহীয়সী প্রমাণ করতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জনকে দিয়ে লেখানো হয় অসংখ্য কলাম।

দেশের টাকায় বিদেশে চালানো হয় ব্যাপক প্রচারণা। এতসব প্রচারণা ও অর্থব্যয়ের ফলে নোবেল পুরস্কার না জুটলেও ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো শেখ হাসিনাকে হুপে বোয়ানী শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করে। আর তখন থেকে নোবেল পুরস্কারের মোহটাও আরো

জেঁকে বসে তার মাথায়। জীবনে প্রাপ্তির ষোলোকলা পূর্ণ করতেই যেন নোবেলটাই যেন তার কাছে একমাত্র আরাধ্য হয়ে উঠে। পার্বত্য শান্তি চুক্তি দিয়ে কাজ না হওয়ায় খুঁজতে থাকে আরো বড় কোন সুযোগের।

অবশেষে ২০১৭ সালে শেখ হাসিনার কাছে চলে আসে সেই সুযোগ। সে বছরের সেপ্টেম্বরে মিয়ানমারের থেকে বিতাড়িত হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা আসতে থাকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। সেসময় পরিকল্পিতভাবেই কক্সবাজারের একটি জনসভায় ঘোষণা দেন, আমরা ষোলো কোটি মানুষকে খাবার দেই৷ সুতরাং আমাদের দেশে আসা দুই-পাঁচ-সাত লাখ রোহিঙ্গাকে খাবার দেওয়ার ক্ষমতাও আমাদের আছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন শেখ হাসিনার এমন প্রকাশ্যে আহবানের পরই স্রোতের মতো রোহিঙ্গারা প্রবেশ করতে থাকে। নয়তো রোহিঙ্গা পরিস্থিতি এতটা ভয়ঙ্কর হতো না। সেসময় ভবিষ্যৎ বিপদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে কূটনীতিকসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা তা আমলে নেননি৷ বরং ওই জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টিকে পুঁজি করে তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা সেজেছিলেন।

কিছু চাটুকার নেতা ও সুশীল সম্প্রদায় শেখ হাসিনার নামের আগে মাদার অব হিউম্যানিটি যুক্ত করতে থাকেন। যদিও হাসিনা হিউম্যানিটি নয়, রোহিঙ্গা ইস্যুকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন নোবেল পুরস্কার পাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনার সেই নোবেল পুরস্কার পাওয়ার মোহ দেশকে কঠিন এক হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কের কারণ।

বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ প্রদর্শনের পরিবর্তে তারা উলটো বাংলাদেশের বিরুদ্ধেই সশস্ত্র তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বড় কোন মিশনের উদ্দেশ্যে গোপনে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে যাচ্ছে। চুরি, ডাকাতি, খুনসহ মাদকের ভয়াবহ রাজত্ব কায়েম করেছে তারা। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রভাবে কক্সবাজারের স্থানীয়রাই এখন হয়ে গেছেন নিজ ভূমিতে পরবাসী।

এ ব্যাপারে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, রোহিঙ্গারা একবার বাংলাদেশে ঢুকতে পারলে আর যে তারা ফেরত যাবে না, বা ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না-এটা সরকারসহ সব মহলেরই জানা ছিল।

প্রশ্ন হলো, তাহলে ঢুকতে দেয়া হলো কেন?
উত্তর পরিষ্কার, মূলত শেখ হাসিনা ভেবেছিলেন; এই উদ্যোগ নেয়ার ফলে তিনি খুব সহজে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাবেন। কিন্ত দুঃখের বিষয়, দীর্ঘ দুই দশকের শাসন আমলে প্রায় ৪২টি পদক বিশেষ ব্যবস্থায় পেলেও নোবেলের সোনার হরিণটি তার আর পাওয়া হয়ে ওঠেনি। বরং নোবেল পুরস্কারের মোহে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে দেশে প্রবেশ করিয়ে তিনি দেশের স্থায়ী সর্বনাশ ডেকে এনেছেন। ঠিক কতদিন এই রোহিঙ্গা নামের বিষফোঁড়া বাংলাদেশকে ভোগাবে কিংবা কীভাবে হবে এর সমাধান, তা জানা নেই কারোরই।

সূত্রঃ https://www.facebook.com/share/v/191YXojfmg/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *