
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে প্রথম ভাষণেই রেকর্ড গড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রায় এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট ধরে দেওয়া এই ভাষণ মার্কিন পার্লামেন্টের ইতিহাসে দীর্ঘতম ভাষণগুলোর একটি। এর আগে ২০০০ সালে বিল ক্লিনটন স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এক ঘণ্টা ২৮ মিনিট বক্তব্য দিয়েছিলেন।
নিজ প্রশাসনের নেওয়া বিভিন্ন বিতর্কিত পদক্ষেপের পক্ষে সাফাই গেয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, মাত্র ৪৩ দিনেই তিনি যা অর্জন করেছেন, তা অনেক প্রেসিডেন্ট আট বছরেও করতে পারেননি।
তিনি বলেন, “ছয় সপ্তাহ আগে আমি এই ক্যাপিটালের নিচে দাঁড়িয়ে আমেরিকার স্বর্ণযুগের সূচনার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই সময় থেকেই আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল যুগ প্রতিষ্ঠায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। এটি কেবল শুরু।”
ভাষণে ট্রাম্প সামরিক বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার প্রতিশ্রুতি দেন। কংগ্রেসকে আহ্বান জানান, ভূমি প্রতিরক্ষায় ‘গোল্ডেন ডোম মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম’ গঠনের জন্য তহবিল বরাদ্দ দিতে।
তিনি বলেন, “কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে আমার লক্ষ্য ভবিষ্যতে সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গড়ে তোলা।” রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে ট্রাম্প দাবি করেন, “যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত, আর শান্তির জন্য প্রস্তুত রাশিয়া। আমরা জোরালো সংকেত পেয়েছি যে তারা আলোচনায় আগ্রহী।”
ইউরোপের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব বাড়ানোর পাশাপাশি শুল্ক আরোপ করে কানাডা, মেক্সিকো এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এছাড়া, গ্রীনল্যান্ড এবং পানামা খালের মালিকানা ফিরে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাও পুনর্ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করে তিনি দাবি করেন, গত মেয়াদে দুই কোটির বেশি অভিবাসী অনুপ্রবেশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রে।
দীর্ঘ ভাষণে প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ধনকুবের ইলন মাস্কের ভূয়সী প্রশংসা করেন ট্রাম্প। যদিও কী কারণে বা কোন প্রসঙ্গে তাকে প্রশংসিত করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেননি। ট্রাম্পের এই ভাষণ তার আত্মপ্রচারমূলক বক্তব্যে ভরা ছিল বলে সমালোচকদের দাবি।
তবে তার সমর্থকদের মতে, এটি ছিল একটি দৃঢ় ও আত্মবিশ্বাসী অভিভাষণ, যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।