উত্তরায় হামলার ঘটনায় আহতরা ‘স্বামী-স্ত্রী নন’, জানা গেল মূল ঘটনা

গত সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর উত্তরায় এক দম্পতিকে প্রকাশ্যে কোপাতে থাকেন কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্য। এ সময় পুরুষকে বাঁচাতে ধারালো অস্ত্রের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যান এক নারী।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা। একাধিক গণমাধ্যমে খবরের শিরোনাম করা হয়, স্বামীকে বাঁচাতে ঢাল হয়ে দাঁড়ান স্ত্রী, ভাসছেন প্রশংসায়।

ঘটনা একদিন পর জানা গেল, কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত ওই পুরুষ ও নারীর নাম মেহবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তি। আর তারা স্বামী-স্ত্রী নন, তারা কেবলই সহকর্মী। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মেহবুল হাসানের স্ত্রী শম্পা বেগম।

তিনি নিজেকে মেহবুলের বৈধ স্ত্রী দাবি করে বলেন, ‌২০১৬ সালে মেহবুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের ৫ ও ৪ বছরের দুটি সন্তান রয়েছে। এ সময় প্রকাশ্যে মেয়েদেরও নিয়ে আসেন শম্পা।

এসময় ইপ্তির সঙ্গে স্বামী মেহবুলের পরকীয়ার সম্পর্ক বলেও অভিযোগ করেন শম্পা বেগম। তবে মেহবুল ও ইপ্তির বিয়ে হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি। মিডিয়ার সামনে নিজের পরিচয় প্রকাশ করায় তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন শম্পা।

শম্পা বেগম আরও বলেন, মেহবুল হাসান ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে কাজ করেন। ঘটনার দিন তিনি সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হন। স্বামী বাইরে থাকলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন না।

সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘটনা দেখে তিনি হামালার বিষয়টি জানতে পারেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উত্তরায় হামলার কারণ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। ওই রাতে স্বামী উত্তরায় কেন গিয়েছিলেন,

তা-ও জানেন না তিনি। এদিকে, সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেই শম্পাকে মোবাইলে কল দেন মেহবুল হাসান। যদিও শম্পা বেগমের অভিযোগ নিয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি মেহবুল হাসান এবং নাসরিন আক্তার ইপ্তির।

উল্লেখ্য, গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডে মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তি কয়েকজন তরুণের হামলার শিকার হন।

এ ঘটনায় জড়িত পুরো চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। আজ বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রওনক জাহান।

হামলার ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। ঘটনার দিনই দুজনকে আটক করে পুলিশে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই নারীর প্রশংসা করেন অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *