
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন টকশোতে ব্যারিস্টার আহমেদ বিন কাশেম আরমান তাঁর আট বছরের জেল জীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এবং গুম কমিশন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করেছেন। বিশেষত, তিনি আয়নাঘর পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা এবং আলামত চিহ্ন ধ্বংসের ব্যাপারে কিছু চমকপ্রদ তথ্য দেন। উপস্থাপকের প্রশ্ন,“আমরা শুনেছি যে পাঁচ তারিখের পরেই আয়না ঘরের অনেক আলামত অনেক চিহ্ন মুছে ফেলা হয়েছে?
আপনার কি তাই মনে হয়েছে?” ব্যারিস্টার আরমান বলেন, প্রথমত আমি সঠিকভাবে আমার লোকেশন আমি নিজে বলতে পারিনি। যখন গুম কমিশন স্থাপন করা হয় এবং সেখানে অভিযোগ দায়ের সুযোগ দেওয়া হয় ,তখন আমি আমার অভিযোগ দায়ের করি তখন গুম কমিশন থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং তারা আমার যতটুকু মনে পড়ে স্মৃতিশক্ত যা আছে আমাকে যা ভিতরে কি কি শুনেছি কি কি আমার মনে হয়েছে তারা আমার কাছে নিয়ে তখন তারা আমাকে তাদের ফাইন্ডিং এর একটা কনক্লুশন আমাকে দিয়েছেন যে আমি এই লোকেশনে ছিলাম,
তারপর তারা আমাকেসেখানে লোকেশনের বেশ কিছু ছবি আমার কাছে পাঠিয়েছেন। তিনি আরও বলেন,“আমি তখন চিকিৎসার জন্য দেশে বাইরে ছিলাম কিন্তু আমি বারবার বলছিলাম যে আমার সেলটা যে ছবি দিচ্ছেন এর সাথে একটু ভিন্ন, মিলছে না।শুধু একটা জিনিস আমি চিন্তা করতাম, চোখ বেঁধে আমাকে বিভিন্ন সময় সেল থেকে বের করতো,বের হয়ে ডানদিকে টার্ন নিতাম, নিয়ে আমি পাঁচটা সিঁড়ি পেতাম। আমি বারবার বলতাম যে, আমার মনে আছে পাঁচটি পাঁচটা সিঁড়ি উঠতাম আবার নামানোর সময় পাঁচটা সিঁড়ি নেমে ঢুকতাম।
কিন্তু কোনমতেই তারা এই সিঁড়িটা তারা খুঁজে পাননি। এবং আমি বলতাম যে আমি আওয়াজ শুনছি ট্রেনের আওয়াজ শুনছি, এক্সস্ট ফ্যান বন্ধ হলে আমরা এখানে আওয়াজ শুনতে পারতাম। সেই সব ক্লু দিয়ে তখন তারা লোকেশনটা আইডেন্টিফাই করেছে। এখানে কিন্তু আমি যে সেলে ছিলাম সেগুলো মিল ছিল না।”
ব্যারিস্টার আরমান আরও বলেন,“কোনখানে সেটার অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছিল না।পরে যেটা আবিষ্কার করা হলো ,গুম কমিশনের নির্ভীক সদস্যবৃন্দ নিরলসভাবে এখানে তদন্ত চালিয়ে যেটা আবিষ্কার করেছেন যে, সেই সেলগুলোর দরজা ভেঙে দেয়াল তুলে দেওয়া হয়েছিল। দেয়াল তুলে রং করে এমন ভাবে দেয়া হয়েছিল,যেগুলোর অস্তিত্বই বিলীন করে দেওয়া হয়েছে এবং যেসব সেলগুলো এমন ভাবে ছিল যে ভেঙে ফেলা সম্ভব সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছিল এবং
এটাকে প্রমাণ বিনষ্ট করার সর্বোচ্চ চেষ্টা তারা করেছিল। কিন্তু আমি বারবার বলেছি যে সিঁড়িতে নেমে বামে গেলেই আমার সেল পরে। তারা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমার নির্দেশ যেই জায়গাটা আমি বলেছি যে আমার সেল হতে পারে বলে আমার মনে হয়, তারা সেই দেয়ালটা ভাঙ্গেন এবং দেখতে পারেন যে সেখানে ভিতরে একটা সেল রয়েছে এবং আমি যে বিবরণ দিয়েছি সেটার সাথে মিলে যায় এবং এভাবেই সেই সেলটা উদ্ধার হয়।
প্রথমত আমি অবাক হয়েছি যে, কি পরিমাণ দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে যে, তারা তাদের অপরাধ ঢাকার জন্য কোন পর্যায়ে গিয়েছে! এর অর্থ আমরা যে আয়নাঘর দেখলাম এটা আসলে রিয়েল না!
অনেক ভাঙচুর করে ইমপ্রুভ করা হয়েছে, এটার ডিটেইল আমাদের কমিশনের সম্মানিত সদস্য রয়েছেন যারা সকল প্রতি হাজার প্রতিকূলতার মধ্যে নির্ভীকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, আমি বলতে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে চাই তারা আমাদের ভিকটিমদের সাথে নিরলস ভাবে যোগাযোগ করেছেন বিশেষ করে আমি অনেক দূরে ছিলাম, দেশের বাইরে ছিলাম। আমার যখন দিন তাদের তখন রাত, তারা সেইসব উপেক্ষা করে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং তারা আবিষ্কার করতে পেরেছেন যে যত যাই করুক সত্য গোপন থাকুক তারা চেষ্টা করেছে।”