জাতিসংঘ প্রমাণ করলো ইতিহাসের পাতায় স্বৈরশাসকরা শেষ পর্যন্ত নির্মমতার ফাঁদে আটকে পড়ে

“আমি তো আমার সব হারাইছি, বাবা আমার ভাই সব হারাইছি!”-এই স্বজন হারানোর আহাজারি আজ হাসিনার মুখে। অথচ, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে তিনিই ছিলেন গুম, খুন আর দমন-পীড়নের মূল নির্দেশদাতা। জাতিসংঘের সদ্য প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে,

১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত হত্যার শিকার হয়েছেন ১৪০০’র বেশি মানুষ, যার মধ্যে ১১৮ জন শিশু! ১১৪ পৃষ্ঠার বিশদ প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, সাবেক সরকার এবং এর গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জনগণের ওপর চরম সহিংসতা চালিয়েছে।

চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, খুলনা, সিলেট ও গাজীপুরসহ আন্দোলনপ্রবণ এলাকাগুলোতে জাতিসংঘের বিশেষ তদন্ত দল সরেজমিনে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে ২৩০ জনেরও বেশি মানুষের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৩৬ জন ছিলেন বর্তমান ও সাবেক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, হাসিনার সরাসরি নির্দেশেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী একের পর এক হত্যাযজ্ঞ চালায়, যার ফলে সহিংসতার মাত্রা চরমে পৌঁছায়। অন্যদিকে, হাসিনা আজ মায়া কান্নায় ভাসছেন স্বজন হারানোর বেদনায়।

অথচ, তারই শাসনামলে হাজারো পরিবার হারিয়েছে তাদের প্রিয়জনকে, নির্বিচারে গুম-খুন হয়েছে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। এমনকি, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্পও!

দেশের জনগণ অবশেষে ফ্যাসিস্ট শাসকের মুখোশ টেনে খুলে দিয়েছে। নিজের চালানো দমননীতির বলি হয়েই ৫ আগস্ট পালিয়ে যেতে হয় হাসিনাকে!

জাতিসংঘের প্রতিবেদন আজ প্রমাণ করে দিয়েছে, ইতিহাসের পাতায় স্বৈরাচারী শাসকরা শেষ পর্যন্ত নিজেরই নির্মমতার ফাঁদে আটকে পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *