সিএনজি ড্রাইভারদের জন্য দুঃসংবাদ, যে নির্দেশনা না মানলেই ৫০ হাজার টাকা জরিমানা!

কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) চালিত অটোরিকশার চালক মিটারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করলে তার বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চালককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে। একই নির্দেশনা জারি থাকবে পেট্রোল চালিত অটোরিকশার ক্ষেত্রেও।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এ নির্দেশনা দিয়েছে। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিআরটিএ পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) শীতাংশু শেখর বিশ্বাসের সই করা একটি চিঠি থেকে এ সম্পর্কে জানা গেছে।

চিঠিটি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পুলিশ কমিশনারকে দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, গ্যাস বা পেট্রোল চালিত ৪-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটারের ভাড়ার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগের বিষয়ে মামলা রুজু করার নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ধারা ৩৫(৩) অনুযায়ী কোনো কন্ট্রাক্ট ক্যারিজের মালিক বা চালক রুট পারমিট এলাকার মধ্যে যেকোনো গন্তব্যে যেতে বাধ্য থাকবেন এবং মিটারে প্রদর্শিত ভাড়ার অতিরিক্ত অর্থ দাবি বা আদায় করতে পারবেন না। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনের ধারা ৮১ অনুযায়ী অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং

চালকের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত হিসাবে দোষসূচক এক পয়েন্ট কর্তন করার বিধান রয়েছে। এ অবস্থায়, গ্যাস বা পেট্রোল চালিত ৪-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিকশার জন্য সরকার নির্ধারিত মিটার হারের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট মোটরযান চালকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু প্রদান করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সিএনজি, অটোরিকশার দৈনিক জমা ৯০০ টাকা হলেও মালিকরা ১১০০-১২০০ টাকা নিচ্ছেন। আইনে শিফটিং পদ্ধতি না থাকলেও মালিকরা দুই-তিন শিফট চালিয়ে ১৬০০-১৮০০ টাকা আদায় করছেন। কোনো শ্রমিক আপত্তি জানালে চাবি রেখে দেওয়া ও চাকরি হারানো নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ, অটোরিকশার প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ টাকা।

পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১২ টাকা। প্রতি এক মিনিট ওয়েটিংয়ের (যাত্রাবিরতি, যানজট ও সিগন্যাল) জন্য দুই টাকা। মালিকের জমা ৯০০ টাকা। কিন্তু এমন নির্দেশনা মানেন না অনেক চালক। এ বিষয়ে তাদের অভিযোগ, মালিকদের স্বেচ্ছাচারিতা, পথে পথে চাঁদাবাজি, স্ট্যান্ডের নামে অবৈধভাবে অর্থ আদায়সহ নানা কারণে তারা সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক অটোরিকশা চালাতে পারেন না।

অতিমুনাফা লোভী মালিকদের জন্য তারা বাধ্য হয়ে মিটার ছাড়া সিএনজি চালান। কারণ, প্রতি শিফটে মালিককে জমা দিতে হয় ৯৫০ টাকা। আর রাতের শিফটে সকাল ৬টা অবধি চালালেও মালিককে দিতে হয় ৯০০ টাকা।

ফলে, তাদের পক্ষে মিটারে সিএনজি চালিয়ে পরিবার নিয়ে রাজধানীতে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে প্রাইভেট অটোরিকশা নিয়েও। রাজধানীর নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় প্রাইভেট অটোরিকশা ভাড়ায় চালানো হয়।

কেননা, প্রাইভেট সিএনজির ক্ষেত্রে মিটার ব্যবহার করতে হয় না। এসব বাহনের রেজিস্ট্রেশন পাওয়া সহজ। ফলে শুধু রং পরিবর্তন করেও শত শত বাণিজ্যিক অটোরিকশাকে প্রাইভেট রূপ দিয়ে ভাড়ায় খাটানো হচ্ছে, এমন অভিযোগও রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *