আগামীকাল নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, গুরুত্ব পেতে পারে যেসব বিষয়!

চলতি অর্থবছরের শেষ ছয় মাসের (জানুয়ারি-জুন ২০২৫) জন্য সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এবারের নীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ ও বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

তবে, সংকোচনমূলক নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সুদের হার বাড়ানো না-হয় এমন অনুরোধ জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করেন, বাজার ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়ে জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। সরকার পরিবর্তনের পরও নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর পূর্ববর্তী মুদ্রানীতি পর্যালোচনা করেননি।

তবে বাজারে টাকার প্রবাহ কমাতে তিনি নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছেন। এর প্রভাব এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে পড়েনি, কারণ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি ছিল উচ্চমাত্রায়।

জানুয়ারিতে কিছুটা কমলেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি এখনও চড়া। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী জানিয়েছেন, এবারের মুদ্রানীতি অত্যন্ত সতর্কতামূলক হবে। অর্থনীতির চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনায় নিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ,

রিজার্ভ সংরক্ষণ ও বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখাই প্রধান লক্ষ্য। সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরশীল,

তাই সুদের হার বাড়ালে উৎপাদন ব্যয় বাড়বে এবং মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভোক্তা ঋণের হার বেশি থাকায় সুদ বাড়ালে ভোক্তারা কেনাকাটা কমিয়ে দেন।

কিন্তু বাংলাদেশে এটি কার্যকর নাও হতে পারে। তাই সংকোচনমুখী নীতি নয়, ভারসাম্যপূর্ণ মুদ্রানীতি প্রয়োজন। নতুন মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য হবে বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা এবং রিজার্ভের পতন ঠেকানো। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, খুব বেশি সংকোচনমুখী নীতি গ্রহণ করা হলে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বজায় রাখা সম্ভব নয়।

তাই এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, একইসঙ্গে সুদের হারও সহনীয় রাখতে হবে। নমনীয় মুদ্রানীতি গ্রহণ করা হলে তা দেশের অর্থনীতি ও ব্যবসার জন্য ইতিবাচক হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *