
বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ করে অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং শেয়ারবাজার জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান ৩৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত লকার খুলে সম্পদের হিসাব পরীক্ষা করতে চায় সংস্থাটি।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের উপস্থিতিতে দুদকের বিশেষ দল লকারগুলো খুলবে। এর আগে, আদালতের অনুমতি নিয়ে লকারগুলো ফ্রিজ করা হয়। দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম লকার খুলে সম্পদের তালিকা তৈরি করবে, যা পরে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরীর (এস কে সুর) লকার থেকে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা উদ্ধার হওয়ার পর আরও ৩৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন, বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ ও অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।
আদালতের নির্দেশনার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ লকার খোলার বিরোধিতা করছেন, আবার কেউ দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ চাচ্ছেন।
দুদক বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক দুই গভর্নর ড. আতিউর রহমান ও মো. আবদুর রউফ তালুকদারের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। এছাড়া নজরদারিতে রয়েছেন— ডেপুটি গভর্নর মোছা. নুরুন্নাহার, ড. হাবিবুর রহমান, কাজী সাইদুর রহমান;
উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাসের; নির্বাহী পরিচালক ড. সায়েরা ইউনুস; পরিচালক ইমাম আবু সাঈদ, সরোয়ার হোসেন; অতিরিক্ত পরিচালক আবদুর রউফ, মঞ্জুর হোসেন খান; মহাব্যবস্থাপক জাকির হোসেন; যুগ্ম পরিচালক সুনির্বাণ বড়ুয়া,
জোবায়ের হোসেন; উপমহাব্যবস্থাপক তরুণ কান্তি ঘোষ; অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ ফেরদৌস কবির; সহকারী পরিচালক মো. কাদের, হামিদুল আলম সখা; সহকারী ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন।
এছাড়া, সাবেক নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম, সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান ও খুরশিদ আলমসহ আরও কয়েকজন কর্মকর্তাও দুদকের তালিকায় রয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক প্রধান কর্মকর্তা মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেছে দুদক।
সূত্র জানায়, ২০০৬ সালের পর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউতে কর্মরত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, শেয়ারবাজার জালিয়াতি, সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি ও রিজার্ভ তছরুপের অভিযোগের তদন্ত করছে দুদক। ফলে, লকার থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।