বিচার শুরু সেই বরখাস্ত ম্যাজিস্ট্রেট উর্মির!

মানহানির অভিযোগে করা মামলায় সাময়িক বরখাস্ত সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম উর্মির বিরুদ্ধে চার্জ বা অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এ আদেশ দেন।

এদিন তাপসী তাবাসসুম উর্মি জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন। তার পক্ষে আইনজীবী পিএম মাহাদী হাসান অব্যাহতির বিষয়ে শুনানি করেন। তিনি বলেন, আসামি মামলার কথিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তার বিরুদ্ধে মামলার কথিত ঘটনা মিথ্যা, তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ। সেই সময়ে পারিপার্শ্বিক ঘটনা সম্পর্কে ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী নিজেস্ব অভিমত প্রকাশ করেছেন। সেই পোস্টে বাদীর সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নয়।

দণ্ডবিধির ৪৯৯/৫০০ ধারার বিধানে মানহানির ক্ষেত্রে, যেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে সেই ব্যক্তি নিজে এবং মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তার বাবা, মা অথবা নিকটাত্মীয়রা এই মানহানির মামলা করতে পারেন। এই মামলার বাদী শহীদ আবু সাইদের বা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের রক্ত সম্পর্কিত কেউ নন। বাদীর দায়েরকৃত অভিযোগ করার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই বিধায় আসামি অব্যাহতি পাওয়ার হকদার বটে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি ইচ্ছাকৃতভাবে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই ফেসবুকে এই মানহানিকর পোস্ট দিয়েছেন। এ মামলার বাদী সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নেন ও ১১ দিন জেল হাজতে ছিলেন। তাই এই মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে আইনগত বাধা ছিল না।

এ মামলায় অভিযোগ গঠনের যথেষ্ট উপাদান রয়েছে। এজন্য তার অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করছি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

গত ২৬ জানুয়ারি একই আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। ওইদিন তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। একই সঙ্গে তার আইনজীবী শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির জন্য ৪ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেন।

একইসঙ্গে তাপসী তাবাসসুমের জামিন মঞ্জুর করেন। ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর ঊর্মির বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।

আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড এবং পর্যালোচনা শেষে ২৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম ফেসবুকে একটা পোস্ট দেন।

সেখানে তিনি আবু সাঈদ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। এর আগে, ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় গত বছরের ১৪ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *