বিজ্ঞানীদের গবেষণায় প্রমাণিত হলো ‘কোরআনের আয়াত’

মানবদেহের সবচেয়ে রহস্যময় অঙ্গের একটি হচ্ছে হার্ট। এতদিন ধরে বিজ্ঞান আমাদের শিখিয়েছে, হার্ট মস্তিষ্কের কমান্ড মেনেই কাজ করে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তাদের সাম্প্রতিকতম এক গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন,

হার্টেও বসানো রয়েছে ক্ষুদ্র একটি ব্রেইন। শুনতে অবাক মনে হলেও আজ থেকে সাড়ে ১৪০০ বছর আগেই পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে আয়াত নাজিল করেছিলেন। এবার বিজ্ঞানীরাও কোরআনের সে আয়াত সত্য বলেই প্রমাণ পেলেন।

কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তায়ালা হার্টের বর্ণনা দিয়েছেন। হার্টের গুরুত্ব কতখানি তা এসব আয়াতে উঠে এসেছে। সুরা মুহাম্মদের ২৪ নম্বর আয়াত সেগুলোরই একটি। এই আয়াতে আল্লাহ বলেন, তবে কি তারা কোরআন নিয়ে গভীর চিন্তা করে না?

নাকি তাদের অন্তরসমূহে তালা রয়েছে? অর্থাৎ এখানে অন্তর বা হার্টের চিন্তার কথা বলা হয়েছে। এভাবে হার্টের বিভিন্ন অবস্থা নিয়েও আল্লাহ কোরআনে আয়াত নাজিল করেছেন। এবার বিজ্ঞানীরাও দেখতে পেয়েছেন হার্টের নিজস্ব চিন্তাধারা রয়েছে।

সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট ও নিউইয়র্কের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এ নিয়ে নতুন গবেষণা চালিয়েছে। তাদের ভাষায়, হার্টের একটি নার্ভাস সিস্টেম রয়েছে। এ সিস্টেমের নাম তারা দিয়েছেন ইনট্রাকার্ডিয়াক নার্ভাস সিস্টেম।

হৃদস্পন্দনের ছন্দ ধরে রাখা ছাড়াও এ ইন্ট্রাকার্ডিয়াক নার্ভাস সিস্টেমের বহু সক্রিয় ভূমিকা খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। আর এটিই মস্তিষ্ক থেকে আসা সংকেতে হৃদস্পন্দন চালিত হওয়ার সেই পুরোনো ধারণাকে বদলে দিয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, হার্টের নার্ভাস সিসটেম সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। যে কারণে মস্তিষ্কের নির্দেশনা ছাড়াও হার্ট চলতে পারে। আর এ কারণেই গবেষকরা বলছেন, হার্টের নিজেরই রয়েছে একটি ছোটখাটো মস্তিষ্ক।

নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠায় জেব্রাফিশ নিয়ে পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। এই মাছ এবং মানুষের হৃদযন্ত্রের গঠন এবং কাজের প্রক্রিয়ায় অদ্ভুত মিল রয়েছে। হৃদযন্ত্রের মূল হলো সাইনোট্রিয়াল প্লেক্সাস বা এসএপি।

এই অংশ হৃদযন্ত্রে বসানো পেসমেকারের মতো কাজ করে। এখানেই চোখ রেখে হৃদযন্ত্রে বহু নিউরনের খোঁজ মিলেছে গবেষণায়।  অ্যাসিটাইলকোলিন, গ্লুটামেট ও সেরোটোনিন এমন অনেক নিউরোট্রান্সমিটার দিয়ে একটি নিউরন আরেকটির

সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলে। যে কারণে মস্তিষ্কের বদলে হৃদযন্ত্র নিজেই হৃদস্পন্দন সচল রাখতে পারে। এই নিউরনে ছন্দময় তড়িৎ তরঙ্গ চলাচল করে। মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ড যেভাবে হাঁটাচলা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়ন্ত্রণ করে,

নিউরনের কিছুটা একই ছন্দে কাজ করে। গবেষণায় উঠে আসা এ তথ্য চিকিৎসা ক্ষেত্রের ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে অ্যারিথমিয়া বা হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত ছন্দ এবং যে কোনো কার্ডিয়াক জটিলতায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *