শেখ মুজিবের অবদান নিয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের নতুন বার্তা

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, শেখ মুজিব ও জুলাই আন্দোলন নিয়ে নতুন বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এ বার্তা এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে বাংলাদেশ পন্থীদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধ পন্থী হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের মানুষকে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও এদেশের জন্মকে স্বীকার করেই রাজনীতি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা যাবেন তারা মজলুম বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে অতীতে পরাজিত হয়েছেন। সামনেও পরাজিত হতে বাধ্য। ২৮ জানুয়ারি নিজের ভেরিফাইড ফেইসবুকে এক পোস্টে এসব কথা বলেন মাহফুজ

আলম। যার শিরোনামে লেখা মুক্তিযুদ্ধ মানে বাংলাদেশ ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান মানে বাংলাদেশ। ফেসবুকের ওই পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, মুক্তিযুদ্ধের পর কী হয়েছে তা নিয়ে সমালোচনা করুন। ইতিহাস পর্যালোচনা করুন।

কোন সমস্যা নেই। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কী কী ঘটেছে তা নিয়েও তর্ক উঠতে পারে। কিন্তু সে সবই হবে মুক্তিযুদ্ধকে মেনে নিয়ে। এ প্রসঙ্গে উদাহরণ টেনে মাহফুজ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন,

যেমন শেখ মুজিবের ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠা নিয়ে আমরা বলব, উনি ফ্যাসিস্ট ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের জন্মে অনেক জাতীয় নেতৃত্বের মতো ওনার অবদান অনস্বীকার্য। তাই আমরা বাহাত্তর পূর্ব শেখ মুজিবর রহমানকে প্রাপ্য গুরুত্ব দেব।

মাহফুজ লিখেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ ফ্যাসিস্ট হতে পারেন। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ ছিল আপামর জনগণের লড়াই। মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশের ফ্যাসিস্ট ইসলামোফোবিক ও খুনি হয়ে ওঠার কারণে

আপনিই খোদ মুক্তিযুদ্ধ বা সকল মুক্তিযোদ্ধাকে অস্বীকার কিংবা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেন না। এটা রাষ্ট্রের ভিত্তির সাথে গাদ্দারি।মাহফুজ আলম আরও লিখেছেন, আমরা ভুলে যাই,

মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী দশ বছরের ইতিহাস ছিল ফ্যাসিস্ট, মুজিববাদী মুক্তিযোদ্ধা ও ভারত বিরোধী দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যকার লড়াইয়ের ইতিহাস। কিন্তু সেজন্য আধিপত্য বিরোধী কোনো মুক্তিযোদ্ধা খোদ মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করার দুঃসাহস

করেননি। এখানেই পিনিক পন্থীদের সাথে অন্যদের তফাৎ। এদেশের মানুষের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও বাংলাদেশের জন্মকে স্বীকার করেই এদেশে রাজনীতি করতে হবে উল্লেখ করে মাহফুজ লিখেছেন,

এর কোন ব্যত্যয় হলে আপনাদের আমরা বাংলাদেশের পক্ষের গণ অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি হিসেবে মেনে নেব না। দেশের গণ অভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধের পরে ফ্যাসিস্ট মুজিববাদী প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান,

বাকশাল টু জিরো এর বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান হিসেবে বর্ণনা করে মাহফুজ আলম লিখেছেন, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সেই ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা এ গণ অভ্যুত্থানে বরং শেখ পরিবার ও মুজিববাদী প্রকল্প থেকে মুক্তিযুদ্ধ পুনরুদ্ধার হল।

পোস্টে বাংলাদেশ পন্থীদের অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধ পন্থী হতে হবে উল্লেখ করে মাহফুজ আলম লিখেছেন, তবে এটাও সত্য যে মুক্তিযুদ্ধ করা অনেকেই ফ্যাসিস্ট ও তাবেদার হয়ে উঠেছিলেন। আজ তারা ছাত্র জনতার কাছে পরাজিত হয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা যাবেন তারাও মজলুম বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে যাওয়ার কারণে অতীতে পরাজিত হয়েছেন। সামনেও পরাজিত হতে বাধ্য। এরপর জুলাই জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার সুযোগ নিয়ে এসেছে মন্তব্য করে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম লিখেন,

লীগের সাথে বিচারকার্য সম্পন্ন করে বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে আমরা আগ্রহী ছিলাম। অথচ দিল্লির আশ্রয়ে থেকে দেশবিরোধী চক্রান্ত করাকেই তারা বেছে নিল। আপনারাও ইতিহাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। জাতিকে বিভাজন থেকে রক্ষা করতে অবশ্যই ৭১ ও ২৪ কে নিঃশর্ত ও নিরঙ্কুশ মেনে এগোতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *